• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হিমুর মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন সেই মেকআপ আর্টিস্ট মিহির


বিনোদন ডেস্ক নভেম্বর ৫, ২০২৩, ০২:৫০ পিএম
হিমুর মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন সেই মেকআপ আর্টিস্ট মিহির

ঢাকা : জনপ্রিয় অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যুতে দেশের মিডিয়াপাড়া বেশ সরগরম। এ মৃত্যুর রহস্য নিয়ে নানা প্রশ্ন ভক্তদের।  

জানা গেছে, হিমুর মৃত্যুর সময় প্রেমিক উরফি জিয়া ছাড়াও সেখানে ছিলেন মেকআপ আর্টিস্ট মিহির। ইতোমধ্যে উরফিকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি আরেক ব্যক্তির কাছেও সুরাহা খুঁজছে র্যাব।

এই মিহির শুধু অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুই নয়; ২০১৮ সালের মে মাসে বিনোদন জগতের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব তাজিন আহমেদের মৃত্যুর সময়ও পাশে ছিলেন। এমনকি দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া থেকে শুরু করে চিকিৎসকের মৃত ঘোষণা পর্যন্ত সঙ্গে ছিলেন মিহির। এককথায় তাদের পুরো মৃত্যুর ঘটনাটি দেখেছেন একজন মেকআপম্যান।

হিমুর মৃত্যুর পর মিহির প্রসঙ্গে উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, হিমুর সমস্ত তথ্য, জীবনযাপনের কষ্ট, সব কিছু মিহির জানে। মিহিরকে ডিবি বা পুলিশের ইন্টারোগেশনে আসা উচিত। তাকে জিজ্ঞাসা করলেই তথ্য পাওয়া যাবে এটা কি অপমৃত্যু, না অন্য কিছু।

এসব আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই রোববার (৫ নভেম্বর) সকালে আলোচিত মিহির নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন। সেখানে তিনি হুমায়রা হিমুর মৃত্যু নিয়ে কথা বলেন। সঙ্গে রাখেন বেশ কয়েকটি প্রশ্নও। ১৫ মিনিটের সেই লাইভের শুরুতেই মিহির জানান, তিনি প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছেন। এ জন্য তিনি বিষয়টি সবার সঙ্গে শেয়ার করতে লাইভে এসেছেন।

মিহির বলেন, ফেসবুকে আমাকে নিয়ে ঝড় তুলছে কিছু মানুষ। আমি হেন, আমি তেন, আমি ড্রাগ ডিলার। তার পর তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন— এর পরও পুলিশ আমাকে রিমান্ডে নেয় না কেন? তিনি বলেন, আপনারা যে এটা লিখেছেন আপনারা কি জানেন আমি এই তিন দিন কোথায় ছিলাম? আমি হিমুকে বাসা থেকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি, যখন ডাক্তার ঘোষণা দিয়েছে যে হিমু মৃত। সঙ্গে সঙ্গে হিমুর বয়ফ্রেন্ড দুটি মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গেছে। তার পর ওর (হিমুর) খালারা আসছে, আমরা থানায় গেছি, স্টেটমেন্ট দিয়েছি। তখন থেকে আমি কালকে (শনিবার) পর্যন্ত থানায় বসা ছিলাম।

শনিবার সকালে ওসি আমাকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পুরান ঢাকা পাঠাইছেন। ওখানে গিয়ে আমি ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সাক্ষী দিই। তার পর ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে বলেছেন যে, ঠিক আছে আপনি এখন যেতে পারেন। এসআই সাব্বির ভাই বলল, আপনার আর কোনো কাজ নেই আপনি যেতে পারেন। এই তিন দিন ধরে আমাকে থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছে, নজরবন্দিতে রাখা হয়েছে। আমার ফোন টেপ করা হয়েছে। আমাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করা হয়েছে। হাজার হাজার প্রশ্ন করা হয়েছে।

আমাকে পুলিশ আর কি রিমান্ডে নেবে, আমাকে কি নিয়ে ফাঁসি দিয়ে দিবে— এমন প্রশ্ন রেখে মিহির বলেন, আমি কি ক্রাইম করছি। হিমুর বাসায় থাকার কারণ হচ্ছে, আমার কাজ বন্ধ, আমি একটা সিরিয়াল করছি ওইটার পেমেন্ট আজকে ছয় মাস ধরে বিটিভিতে আটকানো, বাসা ভাড়া দিতে পারি না। আমার বাড়িওয়ালি আমার রুম তালা মেরে দিসে। তাই আমি বাধ্য হয়ে হিমুর বাসায় ছিলাম।

আর এমনিতেও থাকতাম। রাতে হয়তো আমি আমার বাসায় থাকতাম, পরে আমি হিমুর দেখাশোনা করতে চলে আসতাম। কারণ হিমুর মাকে আমি মা ডাকছি, উনাকে আমি আম্মা বলতাম। হিমুর মা আমাকে বলছে যে, আমি না থাকলে আমার মেয়ের দেখাশোনা করিস।

তাজিন আপা মরছে আমি ছিলাম, হিমু মরছে আমি ছিলাম— এ বিষয়টি আপনাদের ভাবিয়ে তুলছে জানিয়ে মিহির বলেন, এই পাঁচ বছরের ব্যবধানে দুজন মানুষ মরছে আমি ছিলাম। তারা আমার নিকটাত্মীয় ছিল, ফ্যামিলি মেম্বারের মতো।

তিনি বলেন, আমি না থাকলে হিমুর বয়ফ্রেন্ড তাকে ঘরের ভেতর ঝুলাইয়া রাইখা দরজা বন্ধ কইরা পালাইয়া যাইত। এটা কি হতো না? এটা তো কেউ বলেন না যে, তুই ছিলি বলে হিমুকে আমরা বের করে আনতে পারছি বা ওকে ধরতে পারছে পুলিশ। হিমুর বয়ফ্রেন্ড ইন্ডিয়ান। না হলে তো ওই ছেলে হিমুকে রেখে কবে পালাইয়া যাইত। ঠাণ্ডা মাথায় পলাইয়া যাইত। আমি ভালো করছি এটা কেউ বলে না। সব খারাপ করছি, আমি রাবন। আমাকে পারলে ফাঁসি নিয়া দেন।

মিহির বলেন, হিমু মরছে আমি ছিলাম। এখন আমি করছি না ওই ছেলে করছে সেটা তো ওই ছেলে নিজেই স্বীকার করছে। তার পরও কেন আপনাদের ভেতর এত দ্বিধাদ্বন্দ্ব যে মিহির ছিল। মিহির ছিল বলেই তো ফ্রেশ হিমুরে বের করে হাসপাতালে নিয়ে আসছে।

আমি উপকার করছি এই জন্য আমাকে সবাই মিলে ফাঁসি দিয়ে দেন। আমার কেউ নেই তো, কোনো বড় লেভেলের মানুষ নেই যে আমাকে সাপোর্ট দিবে, ব্যাকআপ দিবে। আমি মনে করতাম মিডিয়া আমার ফ্যামিলি, আমি কাজ করি, সবাই আমার পরিবার, আমি যখন যেখানে কাজ পাই, তাদের জন্য মন থেকে কাজ করি। এমনকি অতিরিক্ত কাজও করে দিই।

তাদের যে কাজ আমার করার না, এগুলোও আমি করি শুটিংয়ের সেটে। আমি সেটে সবাইকে আপন করার চেষ্টা করি। সবাইকে ভালো করে সার্ভিস দিই। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি এত বছরের সার্ভিসে। আমার ভুলটা কোথায় একজন বের করেন, একজন গাইড করেন আমাকে। তা না খালি আমাকে নিয়ে বড় বড় কথা আর বদনামি করবেন, করেন।

আমি যদি কোনো ধরনের খারাপ কাজ করতাম, তা হলে ভয়ে পালাইয়া যাইতাম। আমার ভেতরে ভয় লাগে না। আমার ভেতরে ঘেন্না লাগছে, ভেতরে কষ্ট হচ্ছে। আপনাদের জন্য মায়া হচ্ছে যে, আপনারা এতটা নেগেটিভ যে আপনারা মানুষকে নিয়ে ভাবতে পারেন না। মানুষের সাহায্য করতে পারেন না।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!