ঢাকা : না ফেরার দেশে চলে গেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা আহমেদ রুবেল। বয়স হয়েছিল ৫৫।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তার আধাঘণ্টা আগে তিনি বসুন্ধরা শপিং মলের বেজমেন্টে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান, কিছুক্ষণ পর অজ্ঞান হয়ে যান।
সে সময় আহমেদ রুবেলের সঙ্গে ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক নুরুল আলম আতিক। এই নির্মাতার ‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমায় রুবেল একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা শপিং মলের স্টার সিনেপ্লেক্সে ছিল সেই সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনী। সেখানে এক গাড়িতে এসেছিলেন আহমেদ রুবেল ও আতিক।
সঙ্গে থাকা পরিচালক জানান, গাড়িটি পার্ক করে তারা হাঁটছিলেন। এ সময় আহমেদ রুবেল হঠাৎই পড়ে গিয়ে দেয়ালে লেগে মাথায় আঘাত পান, তার কপাল ফুলে যায়। এরপর তিনি বারবার ঢেকুর তুলছিলেন। তাকে দ্রুত নেওয়া হয় বসুন্ধরা সিটির প্রথম তলায় জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্রে।
কিন্তু অবস্থা গুরুতর দেখে সেখানকার চিকিৎসক দ্রুত আহমেদ রুবেলকে হাসপাতোলে নেওয়ার কথা বলেন। সেই মতো সিএনজি করে নেওয়া হয় স্কয়ার হাসপাতালে। সেখানে সন্ধ্যা ৬টায় জানানো হয়, আহমেদ রুবেল বেঁচে নেই। তিনি হাসপাতালে নেওয়ার পথেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
একাধিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আহমেদ রুবেলের মৃত্যুর এই খবর নাকি এখনো জানানো হয়নি তার ৮১ বছর বয়সি বৃদ্ধ বাবা আয়েশ উদ্দীনকে। দ্বিতীয় সন্তান হারানোর শোক তিনি কীভাবে সামলাবেন, তার কূলকিনারা মিলছে না। গাজীপুরে আহমেদ রুবেলদের ছায়াবীথির বাড়িতে রয়েছেন তার বাবা।
জানা যায়, বুধবার বিকালে বাবা আয়েশ উদ্দীনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বসুন্ধরা শপিং মলের উদ্দেশে প্রাইভেটকার নিয়ে যাত্রা করেন আহমেদ রুবেল। গাড়িটি তিনি নিজেই চালাচ্ছিলেন। কিন্তু ছেলের এই বিদায় নেওয়া যে চিরবিদায় হবে, তা কি বাবা আয়েশ উদ্দীন জানতেন? না, কারণ মৃত্যু বলেকয়ে আসে না।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, আহমেদ রুবেলদের দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে এক ভাই হৃদরোগে মারা গেছেন আগেই। রুবেলও মারা গেলেন একইভাবে। চার বোনের মধ্যে দুই বোন থাকেন ঢাকায়, দুই বোন যুক্তরাষ্ট্রে। আহমেদ রুবেলের স্ত্রীর নাম মনোয়ারা বেগম। রুবেল–মনোয়ারা দম্পতির কোনো সন্তান নেই।
বুধবার রাত থেকে আহমেদ রুবেলের মরদেহ রাখা ছিল মোহাম্মদপুর মারকাজুলের হিমঘরে। সেখান থেকে বেলা ১১টায় মরদেহ ঢাকা থিয়েটারের উদ্যোগে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে নেওয়ার কথা। সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে। এরপর দুপুরে মরদেহ নেওয়া হবে গাজীপুরে। বিকালে সেখানেই দাফন করা হবে।
এমটিআই