ঢাকা : যেন আয়ের চেয়ে ব্যায় বেশি। বর্তমান চলচ্চিত্রে খরা চললেও এফডিসিতে রয়েছে ২১২ জন কর্মকর্তা। যাদের পিছনে গুনতে হয় ১ কোট ১০ লক্ষ টাকার বেশি। যা বর্তমানে এফডিসিতে ফ্লোর, ক্যামেরা ডাবিং, এডিটিং, লাইট, কালার গ্রেডিং, বিএফএক্স, শুটিং স্পট ইত্যাদি ভাড়া দেওয়ার মাধ্যমে মাসে ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল আনুষাঙ্গিক মিলে মাসে প্রায় এক কোটি দশ লক্ষ টাকা খরচ হয়। ২১২ জন কর্মকর্তার মাসিক বেতন দিতে মূলত এফডিসি এখন চরম সংকটে রয়েছে।
বাংলাদেশ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ রয়েছে চৌদ্দটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে এফডিসি একটি। প্রতিষ্ঠানটির নিজেদের আয়ের টাকা দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যয় বহন করতে হয়। একসময় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক ছিল, সরকারের রাজস্বেও যোগান দিত। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের আয় কমেছে। শুধু কমেছে বললে ভুল হবে, বছরের পর বছর তিনগুন লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাহলে কেন এতো কর্মকর্তা-কর্মচারি এখানে? সেটি সবার প্রশ্ন চলচ্চিত্র অঙ্গণে...।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর তিনটা। একেবারেই ফাঁকা বিএফডিসি। দুই-একটি কাজ ছাড়া চোখে পড়ছে না কিছুই। ৯নং ফ্লোরের দ্বিতীয় তলার বারান্দা আশেপাশও জনশূণ্য। সেখানে কপালে চিন্তার ভাজ ফেলে, আনমনে দাঁড়িয়ে আছেন এফডিসির ইলেকট্রিক তত্বাবধায়ক তাহমিদুর রহমান মিলন। কাছে গিয়ে এফডিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন সম্পর্কে জানতে চাইতেই তার মন যেনো আরও খারাপ হয়ে গেল।
শুরুতেই তিনি জানালেন, ‘সরকারি চাকরি করি কিন্তু-বেতন পাই না ৫ মাস। আমাদের কিসের রোজা আর কিসের ঈদ-সব এখন সমান। এক পদের তরকারি দিয়ে খাবার খেয়ে রোজা রাখতে হচ্ছে। আমাদেরটা না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু বাচ্চাদের বিষয়টি কীভাবে মেনে নেই। তাদের কষ্ট সহ্য করার মতো না।’
শুধু তাহমিদুর রহমান মিলন নন। তার মতো এফডিসির ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর একই অবস্থা। কারণ, সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সময় মতো টাকা না পাওয়ায় এফডিসির ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন আটকে আছে। সেই বেতনের দাবিতেই মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এফডিসিতে মানববন্ধন করলেন কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ রয়েছে চৌদ্দটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে এফডিসি একটি। প্রতিষ্ঠানটির নিজেদের আয়ের টাকা দিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যয় বহন করতে হয়। একসময় প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক ছিল, সরকারের রাজস্বেও যোগান দিত। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের আয় কমেছে। শুধু কমেছে বললে ভুল হবে, বছরের পর বছর তিনগুন লোকসান গুণতে হচ্ছে।
এফডিসি সূত্রে জানা গেছে, ৩৫ মিলিমিটারে (সেলুলয়েড) চলচ্চিত্র নির্মাণের সময় কাঁচা ফিল্ম বিক্রয়, ল্যাব প্রিন্ট হতো। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে কাঁচা ফিল্ম বিক্রয় বন্ধ, ল্যাব প্রিন্ট এবং এফডিসির ভবন নির্মাণে তিনটি ফ্লোর ভেঙে ফেলাতে প্রতিষ্ঠানটি ৭০ ভাগ আয় কমে যায়। এছাড়াও সিনেমা হল কমে যাওয়াতে প্রযোজকদের চলচ্চিত্র নির্মাণের আগ্রহ কমেছে।
এর আগে ২০১৫ সাল থেকে ব্যাংকে থাকা এফডিসির এফডিআর ভাঙ্গিয়ে বেতন ও যাবতীয় খরচ নির্বাহ করা হতো। এক সময় এফডিআর শেষ হয়ে যাওয়ায় সরকারি প্রণোদনায় কিছুদিন ব্যয় নির্বাহ করা হয়েছিল।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :