ঢাকা: এফডিসিতে সাংবাদিকদের উপরে অভিনয়শিল্পীদের হামলার ঘটনায় চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এই ঘটনার পরে জয়কে ‘আজীবনের’ জন্য বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন সাংবাদিকরা। একইসঙ্গে জয়কে নিয়ে কোনো পরিচালক কিংবা প্রযোজক কাজ করলে তাদের সংবাদ বয়কটেরও ডাক দিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে অভিনয়শিল্পীদের সেই গণ্ডগোলের ঘটনায় জয় চৌধুরী ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’ বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা রোমানা ইসলাম নীড়। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ফেসবুকে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে এমনটা দাবি করেন তিনি।
যেখানে রোমানা বলেন, এই ১১ বছরের ফিল্ম জীবনে কেউ বলতে পারবে না জয় করো সাথে কোনো দিন কোনো বিষয় নিয়ে বেয়াদবি করেছে। শুধু সাংবাদিক ভাইয়েরা না চলচ্চিত্রের সাথে জড়িত কোনো একটা মানুষ বলতে পারবেনা। এমনকি আমাদের বিএফডিসিতে যে ঝাড়ুর কাজ করে তার সাথেও হেসে কথা বলে তাদের সমস্যায় পাশে থেকেছে। এতটাই ভালোবাসা পেয়েছে যে, শিল্পীরা তাকে ভালোবেসে ভোট দিয়ে শিল্পীদের নেতা বানিয়েছে। ২৩ তারিখ কি এমন হলো যে এই পরিবেশ হলো?
সেদিনের ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কি না প্রশ্ন রেখে জয়ের স্ত্রী বলেন, আপনার শিল্পীকে কেউ বাউন্ডারি ক্রস করে মারতে আসবে আর আপনি কি সেটা চেয়ে চেয়ে দেখবেন? এটাই কি কাম্য আপনাদের? ভিডিওতে সবাই দেখেছে, শিল্পী সমিতির বাউন্ডারি ক্রস করে একজন ভিতরে ঢুকছিল শিল্পীকে আঘাত করার জন্য। সেটা দেখে আরেকজন শিল্পী প্রতিবাদ করেছে! এটাইতো শিল্পীদের ধর্ম হওয়া উচিত। খুব অবাক হলাম, একা জয় চৌধুরীকে দোষ দিয়ে তাকে কোণঠাসা করা হচ্ছে? এটা কোনো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হচ্ছে না তো?
এরপর রোমানা ইসলাম নীড় বলেন, যদি বিচার করতেই হয় আসেন সমান বিচার করতে শিখি। সেখানে কি এমনি এমনিই শিল্পীরা ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন? আসেন আরো সহজভাবে বলি, ওখানে কি এক হাতে তালি বেজেছিল? যে ছেলেটা ১১ বছর করো সাথে কোনো দিন এক মিনিটের জন্য বেয়াদবি করেনি সে হঠাৎ করেই রেগে গেল? যুগে যুগে আমাদের চলচ্চিত্রে হয়ে এসেছে, যখন কেউ একটু মাথা চারা চিয়ে উঠেছে তাকেই টার্গেট করা হয়েছে! সালমান শাহ, মান্না ভাই, শাকিব ভাই, জায়েদ খান, শেষে আসলো এই জয় চৌধুরী!
শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই জয়কে লক্ষ্য করা হয়েছে বলে মনে করেন নীড়। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য সালমান শাহ আজ মরে গিয়েও প্রতিটা মানুষের অন্তরে আছেন। মান্না ভাইও একই! শাকিব খান আজ আমাদের সবচেয়ে বড় সুপারস্টার! জায়েদ খানকে সবাই চেনে! জয়ের কি হবে জনি না! তবে একটা কথা বলতে পারি, জয় জীবন দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রকে এবং এখানকার মানুষদেরকে ভালোবাসে। সর্বোপরি প্রশ্ন রাখতে চাই, এই শিল্পী সমিতির নির্বাচনই কি কাল হলো জয়ের জীবনে? চোখে পড়ে গেল সে? চারিদিকে এতো প্রশংসা এটাই কি কাল হলো?
জয়ের স্ত্রীর দাবি, আমি নিজে বলতে শুনেছি, অন্য শিল্পীরা বলছেন- আজ জয় না থাকলে আমরা জিততে পারতাম না! অন্য শিল্পীরা বলছেন, এমন একজন জয় থাকলে আমাদের হয়ে যেতো! পরিবারকে সময় না দিয়ে দিনের পর দিন শিল্পী সমিতিকে সময় দিয়েছে! আমার মনে পড়ে না একটা ইফতার সে পরিবারের সাথে করেছে! ঈদের দিনটা পর্যন্ত সে পরিবারকে দিতে পারেনি। এগুলোই কি কাল হলো? সাংবাদিক ভাইদের একটা কথায় বলবো সঠিক তদন্ত করে সঠিক সিদ্ধান্তটাই আপনারা নিবেন এটা বিশ্বাস রাখি।
সবশেষ নীড় বলেন, আবেগ বা প্ররোচনায় পড়ে সিদ্ধান্ত সবার জন্যই ক্ষতির। কারণ শিল্পী আর সাংবাদিক একে অপরের পরিপূরক একে অপরের ভাই। তাই, ভাই ভাইয়ের সাথে নমনীয় হবে এটাই স্বাভাবিক। সবশেষে আমরা একটা পরিবার।
আইএ