ভারতের সঙ্গে একই দিনে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে জাহ্নবী কাপুর ও রাজকুমার রাও অভিনীত বলিউড সিনেমা ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’। দেশের ২৬টি প্রেক্ষাগৃহে সিনেমাটির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাকশন কাট এন্টারটেইনমেন্টের কর্ণধার অনন্য মামুন।
এ নিয়ে সোনালীনিউজের মুঠোফোনে প্রযোজক সমিতির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরুর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, গেল ভাষার মাসে আমরা "ফাইটার" নামক একটি ছবির অনুমতি দেয়নি। পরে অনন্য মামুন নামের ভেরিফাইড পেজ এ আমাদের ১৯ সংগঠনের নামে নানান বাজে মন্তব্য করায় আমরা তাকে কােন বিদেশি ছবির অনুমতি দিব না বলে ঠিক করেছিলাম। এরপর অনন্য মামুন ক্ষমা চেয়ে আমাদের চিঠি দিবার পরে গেল বৃহস্পতিবার তাকে নিয়ে একটা মিটিং করি। সেখানে তিনি উপস্থিত হয়নি বরং সেই সময় সেন্সর বোর্ডে ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে দেখা যায় তাকে। যেটা চতুর এবং জালিয়াতির সমান।
অনন্য মামুন কেন এতো দ্রুত এবং বরংবার আপনাদের চোখে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বিদেশি ছবি আনছেন। এমন প্রশ্নের উত্তরে খোরশেদ আলম খসরু আরও বলেন, বিভিন্নভাবে ক্ষমা চাওয়ায় শেষবারের মতো অ্যাকশনকাটের ব্যানারে ছবি মুক্তি অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু এই অ্যাকশনকাট এবং পরিচালক অনন্য মামুনের ব্যানারে আর কোন ছবির অনুমতি দেয়া হবে না। যদি অন্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জালিয়াতি করেও তিনি চেষ্টা করেন সেটিও তারা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
তবে একাধিক বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, অনন্য মামুনের পিছনে অন্য কোন হোতা কাজ করছেন। তাকে আমরা চিনি লস করে বরংবার বিদেশি সিনেমা বাংলাদেশে মুক্তি দিবার ছেলে উনি নন। এর আগেও একাধিক ছবি নিয়ে এসে লস করিয়েছেন। এতে করে বিদেশি ছবির প্রযোজক-পরিচালকরা এদেশের প্রতি আস্থা হারাবে। বরং তার মাধ্যম ছাড়া অন্য কেউ বিদেশি ছবি আনলে লাভবান হবেন জানা গেছে।
সূত্রটি এটাও বলেছেন, নিজের ছবিসহ কোন ছবিতে প্রযোজকের আসল পুঁজি তুলতে পারেন না এই পরিচালক। তাহলে এসব করে কি লাভ পান তিনি। যেখানে দেশি চলচ্চিত্র ধ্বংসের দিকে সেখানে তিনি বিদেশি ছবি এনে দেশীয় চলচ্চিত্রে পেড়াক বসাতে চাচ্ছেন? অনেকে আবার ধারণা করছেন, তার বাড়ী যেহেতু বগুড়ায় তাই তিনি জামাত-শিবিরের এজেন্ট হওয়াই স্বাভাবিক। সেখানে হয়তো বিরোধী দলের ইন্দনে দেশের ছবির ভাবমুর্তি নষ্ট করতে এসব করে চলছেন। সে হয়তো জানেন না এই চলচ্চিত্রের শক্ত ও মজবুদ খুঁটি গড়েছেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। এই অঙ্গণ নষ্ট করা এতো সহজ নয় বলে তাকে হুঁশিয়ারী করেছেন। তাই সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনের প্রতি এগুলি তদন্তের অনুরোধ করেছেন অনেকে।
ছবিটি নিয়ে ভারতের সঙ্গে এদেশের দর্শকেরা বেশ উত্তেজিত ছিল। এই ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জাহ্নবী বলেন, 'ছবির বেশিরভাগ রোমান্টিক দৃশ্যগুলি শ্যুট করার সময় আমি আর রাজ ক্লান্ত থাকতাম। যেমন আমার মনে আছে, আমাদের প্রথম রোমান্টিক দৃশ্য শ্যুটের কথা। তার আগে আমরা প্রায় ২০ ঘণ্টা কাজ করেছিলাম। তারপর যখন এই দৃশ্যটির শ্যুটিং শুরু হল তখন আমরা প্রচন্ড ক্লান্ত, আমাদের শরীরে আর কিছু নেই, একেবারে মড়মড় অবস্থা। তার ওপর আবার আমাদের পেটও খারাপ, শরীরও আর দিচ্ছে না। তারমধ্যে ক্যামেরার সামনে ভাবটা দেখাতে হচ্ছে যেন আমরা একে অপরের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি। প্রথমবার একে অপরকে চুমু খেতে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা আসলে ভিতরে ভিতরে তখন শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম।'
মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি পরিচালনা করেছেন স্মরণ শর্মা। প্রযোজনায় করণ জোহর। গল্পে রাজকুমারকে দেখা যাবে এক ব্যর্থ ক্রিকেটারের ভূমিকায়। তাঁর চরিত্রের নাম মাহেন্দ্র।
নিজে খেলোয়াড় হতে না পারলেও ক্রিকেটের খুব ভক্ত সে। আর জাহ্নবীর চরিত্রের নাম মাহিমা, পেশায় চিকিৎসক। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। দুজনের নামের আদ্যাক্ষর এক হওয়ায় মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি নামে পরিচিতি পায় তারা। ধীরে ধীরে তারা বুঝতে পারে, ক্রিকেট দুজনেরই পছন্দের। মাহিমা পেশায় চিকিৎসক হলেও ব্যাটিংয়ে পারদর্শী। স্ত্রীকে ক্রিকেটার বানানোর জন্য উঠেপড়ে নামে মাহেন্দ্র।
গত বছর থেকে বাংলাদেশের হলে চলছে বলিউডের সিনেমা। শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ দিয়ে শুরু, এরপর একে একে মুক্তি পেয়েছে ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’, ‘জওয়ান’, ‘অ্যানিমেল’, ‘ডানকি’ ও ‘ক্রু’। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মাহি’।
এএন