ঢাকা : একফ্রেমে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, তাঁদের সঙ্গে চিত্রনায়িকা ববিতা, মৌসুমী ও চিত্রনায়ক মান্না—এমন একটি ছবি বহু বছর ধরেই আলোচনায়। এবার এ ছবির বিষয়ে মুখ খুললেন অভিনেতা ওমর সানী। জানালেন, ছবিটির কারণে তিনি ও তাঁর পরিবারকে বারবার হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে। এমনকি চলচ্চিত্রের কোথাও তাদের অবস্থান করতে দেওয়া হয়নি।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ওমর সানী ভ্লগ নামের একটি পেজ থেকে লাইভে এসে কথা বলেন এই চিত্রনায়ক। ‘অজানা কথা একদিন তো আসবেই আর সেদিন হচ্ছে আজকে। আল্লাহ ছাড় দেন ছেড়ে দেন না’ ক্যাপশন দিয়ে ভিডিও বার্তায় বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে মৌসুমীর উপস্থিত থাকার দুটি ছবি দেখান সানী।
ওমর সানী বলেন, ‘যে ছবিটা দেখলেন, এই ছবিটা বহু বহু বছর আগের। একটা কথা আছে—রাষ্ট্র যে অবস্থানে অবস্থান করিবে, রাষ্ট্রের প্রজারা সেখানেই অবস্থানগতভাবে থাকিবে। আমি যদিও কবি না, লেখক না; ভালো করে গুছিয়ে বলতে পারি না, একজন শিল্পী। শিল্পীর যোগ্যতায় আপনাদের সাথে কথা বলছি না। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে আপনার সাথে কথা বলছি।’
ওমর সানী বলেন, ‘এই ছবিটা নিয়ে আমার পরিবারে একটা প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় গিয়েছে। আমাদের চলচ্চিত্রের কিছু অসাধু মানুষ শিল্পী সমিতি বা যেকোনো জায়গা থেকে হোক, দুই-একজন তখনকার প্রশাসনের সাথে হাত মিলিয়ে এই কাজটা করে যেন আমরা চলচ্চিত্রের কোনো জায়গায় অবস্থান করতে না পারি, এটা ছিল ড্যাম পলিটিক্স। এবং এই পলিটিক্সে তারা সফল হয়েছিল। ওই যে সবাই বলে, আমি একা কেন, হাজার হাজার, লক্ষ কোটি, কোটি কোটি মানুষ বলে—বিভৎস একটা সময় গেছে, আমি সেই সময়কালের কথা বলছি।’
এবার সেসব ছবির ব্যাখ্যা দিয়ে নায়ক বললেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। আর আমাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক সাহেব, তাঁর স্ত্রী জোবাইদা ম্যাডাম সেখানে অবস্থান করছিলেন। তো দেখেন এই পাশে কিন্তু ববিতা আপার ছবি (লিজেন্ড ববিতা আপা), আরেক পাশে দেখবেন আমাদের প্রয়াত নায়ক মান্না (আমার ভাই, সিনিয়র বন্ধু মানুষ—তাঁর ছবি)। ওই সময়ে আমি কক্সবাজারে থাকার কারণে এ অনুষ্ঠানে আসতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা অনুষ্ঠান হয়েছিল সেদিন।’
এবার নিন্দুক ও সমালোচনাকারীদের ওপর ক্ষোভ ঝেড়ে ‘আখেরি হামলা’খ্যাত নায়ক বললেন, ‘আমাদের ছবি কিন্তু সবার সাথে থাকতে পারে। একজন ব্রোথেল গার্লের সাথে থাকতে পারে, একজন চোরের সাথে থাকতে পারে, একজন ডাকাতের সাথে থাকতে পারে, সবার সাথেই থাকতে পারে। আমরা কিন্তু জানি না, আমার সাথে দাঁড়িয়ে কোন মেয়েটা ছবি তুলছে, কোন ছেলেটা ছবি তুলছে, তার রাজনৈতিক পরিচয় কী? আমাদের জানার কথা না, কারণ আমরা শিল্পী। অনেকেই কোট করে অনেকে বলেন, আপনার সাথে তো অমুকের ছবি আছে। ওই বেডা! তুই দেখছ না বেডা? আমরা একজন শিল্পী, আমাদের সাথে সবার ছবি থাকতে পারে। তাই বলে আমরা কিন্তু পচে যাইনি।’
ভিডিও বার্তায় নানাভাবে হেনস্থা হওয়ার কথা উল্লেখ করেন ওমর সানী। তিনি বলেন, ‘আজকে যে ঝড় আমি ওমর সানী ফেস করেছি, মাত্রই হেঁটে আসছি, প্রচুর ঘামছি—আর এই কথাগুলো বলতে গিয়ে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছি। ঘাম ছুটছে আমার শরীরে। সেই বিভৎস ঘটনা বহু বছর পরে আপনাদের জানালাম, আপনাদের বিচার দিইনি। বিচার তো আল্লাহ করবেন।’
সবশেষে এসব জুলুমে যারা জড়িত ছিলেন তাদের বিচারের কথা জানিয়ে আবেগাপ্লুত এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘যারা এগুলো করেছে, তাদের বিচার হয়েছে এবং আরও সুন্দর বিচার হওয়ার অপেক্ষায় থাকলাম।’
এমটিআই