ঢাকা : শিল্পীদের যে কারও সঙ্গে ছবি থাকতে পারে। এতে করে ওই ছবির জের ধরে কোনো শিল্পীকে হয়রানি করা অনৈতিক বলে মনে করেন চিত্রনায়ক ওমর সানী। তার ভাষ্য, ‘রাষ্ট্র যেখানে অবস্থান করিবে, প্রজারা সেখানে অবস্থান করিতে বাধ্য থাকিবে। শিল্পীদের সঙ্গে যে কারও ছবি থাকতে পারে। একজন চোরের সঙ্গে বা ব্রোথেল গার্ডের সঙ্গেও ছবি থাকতে পারে।’
দুপুরে এফডিসির প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতিতে নতুন সেন্সর বোর্ড গঠন হলে সেটির সংস্কারের দাবি জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানেই এক প্রশ্নের জবাবে ওমর সানী এ কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের সঙ্গে নায়িকা মৌসুমীর একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুবাদে একসঙ্গে ছবি রয়েছে। সেই ছবিটিই পরে মৌসুমীর জন্য অনেকটা কাল হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান মৌসুমীর স্বামী ওমর সানী।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে ওই ছবির কারণে মৌসুমীকে একাধিকবার রোষানলে পড়তে হয়েছে বলেও জানান এই অভিনেতা। হাসিনা সরকারের পতনের পর এ ঘটনাটি নিয়ে এবার মুখ খুলছেন তিনি।
ছবিটির বিষয়ে ওমর সানী বলেন, ‘ওই ছবিতে এক পাশে ববিতা আপা ছিলেন, এক পাশে মান্না ভাইও ছিলেন। সেখানে তারেক সাহেব ও তার স্ত্রী কবুতর উড়িয়ে দিচ্ছিলেন। মৌসুমীও সেখানে ছিলেন।’ এই ছবির কারণে যা ঘটেছে তা উল্লেখ করে ওমর সানী বলেন, ‘বেনজীর আহমেদ তখন র্যাবের প্রধান ছিলেন। নারায়ণগঞ্জে দেখা হলে এক দিন তিনি বলেছিলেন, তাদের কাছে নির্দেশ আছে, ছবিটি নাকি বিতর্কিত। আমরা বাজে অবস্থার মধ্যে পড়ে যাব। তখন আমি সত্যি আমার পরিবার নিয়ে ভীত হয়ে পড়ি। তারপর থেকে আমার পরিবার ও ব্যবসার ওপর অস্বাভাবিকভাবে তারা ক্ষতি করতে মেতে ছিলেন। শুধু আমি একা নই, আমার কাছের মানুষগুলোও জানে কতটা ব্যথিত হয়েছিলাম।’রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে শিল্পীদের ছবি থাকা প্রসঙ্গে ওমর সানী বলেন, ‘পরিষ্কার করে বলতে চাই, রাষ্ট্র যেখানে অবস্থান করিবে, প্রজারা সেখানে অবস্থান করিতে বাধ্য থাকিবে। শিল্পীদের সঙ্গে যে কারও ছবি থাকতে পারে। একজন চোরের সঙ্গে বা ব্রোথেল গার্ডের সঙ্গেও ছবি থাকতে পারে। তবে হ্যাঁ, এটা সত্য মৌসুমী নমিনেশন (সংরক্ষিত মহিলা আসন, ২০১৮ সালের নির্বাচন) চেয়েছিল। কেন চেয়েছিল সেটা জাহির করতে আসিনি। এটা ওপরওয়ালা ভালো জানেন। মৌসুমী রাজনীতিতে জড়াবে না বলে একটা সময় আমেরিকা চলে যায়।’
এফডিসির শিল্পী সমিতি গুটিকয়েক নেতাদের কুলাঙ্গার উল্লেখ করে ওমর সানী বলেন, ‘সেই কুলাঙ্গারদের কারণে প্রথমবার নির্বাচন করতে এসে দেখি তারা শাকিবের সঙ্গে কী করেছিল। শাকিব কেইস করেছিল। এই কুলাঙ্গারদের কারণে শাকিব সেই মামলা আগাতে পারেনি। যারা এসবে প্রভাব খাটিয়েছিল অনেকে কারাবন্দি। মৌসুমী যখন সমিতির নির্বাচন করে, তারা অনেকে এখন আছে, যারা তার পেছনে ক্ষতি করেছিল।’
এমটিআই