রাজশাহী: রাজশাহীতে প্রকৃতি যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। গেল ৪-৫ দিনে ঘুরেফিরে ৪০ ডিগ্রিতেই থাকছে রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুণ্ড। ভবনের কল দিয়ে নামছে ফুটন্ত পানি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিংয়ের খড়গ! বিদ্যুৎ এখন আর যায় না; মাঝে মাঝে আসে!
একদিকে সীমাহীন গরম, আরেকদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং- দুইয়ে মিলে অসহনীয় করে তুলেছে রাজশাহীর মানুষের জীবনযাত্রা।
ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। আগে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসজুড়েই ঝড়-ঝঞ্ঝা লেগে থাকতো। কিন্তু এখন তা যেন সোনালি অতীত। তীব্র খরাতেই কাটছে এই দুই মাস। রাজশাহীতে অব্যাহত তাপপ্রবাহে মানুষ ও পশুপাখিরা এখন হাঁসফাঁস করছে।
রাজশাহীর ওপর দিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ থেকে মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে রাজশাহী। এতে স্বাভাবিক কাজকর্ম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নতুন করে খরার কবলে পড়েছে রাজশাহীর আম ও লিচু। বৃষ্টি কম হওয়ায় এ বছর এমনিতেই আমের আকার হয়েছে ছোট। তার ওপর এমন রুক্ষ আবহাওয়ায় আম গাছে থাকা ফলন আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
গেল পাঁচ দিনের মধ্যে কেবল গত ৪ জুন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চল্লিশ (৩৯ দশমিক ৮) ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।
এর আগে ৩ জুন রাজশাহীর তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২ জুন ছিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সোমবার (৫ জুন) তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। অর্থাৎ এখন রাজশাহী ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে নেই বৃষ্টির দেখা।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে বৃষ্টির কোনো সুখবর নেই। এর আগে সর্বশেষ গত ২৭ মে রাজশাহীতে বৃষ্টিপাত হয়। যা রেকর্ড করা হয় ৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার। এরপর আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি পরিপাটি এই শহরে।
সোনালীনিউজ/আইএ