ঢাকা: টানা একমাস তীব্র দাবদাহে পর শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা পেয়েছে ঢাকাবাসী। তবে এই স্বস্তির বৃষ্টিতে নগরবাসী কিছুটা প্রাণ ফিরে পেলেও বায়ুদূষণে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান আজ সপ্তম।
আইকিউএয়ারের বাতাসের মানসূচকে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার স্কোর ছিল ১৫১। বায়ুর এ মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে ধরা হয়।
বায়ুদূষণের এই পরিস্থিতি নিয়মিত প্রকাশ করে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক আইকিউএয়ারের সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ২৭৬ স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে ভারতের দিল্লি। ১৯৮ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নেপালের কাঠমান্ডু। ১৮৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে পাকিস্তানের লাহোর।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ভালো বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয় বায়ুর মান। সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচনা করা হয়। এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।
উল্লেখ্য, কখনো কখনো বিশ্বের মধ্যে বায়ুদূষণের শীর্ষে চলে আসে রাজধানী ঢাকা। এই দূষণে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে শিশুদের। রক্ষা পাচ্ছেন না অন্তঃসত্ত্বা নারী ও গর্ভের শিশুও। জন্মের আগেই নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছে শিশুরা।
গবেষকরা বলছেন, চলমান মেগা প্রকল্প, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণাধীন স্থাপনা, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, ইটভাটা, বসতবাড়ি ও কলকারখানার বর্জ্যসহ নানাবিধ কারণে ঢাকার বাতাস দূষিত হচ্ছে। এসবের ফলে রাজধানীর বাতাসে যুক্ত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সিসা, নাইট্রোজেন, হাইড্রোকার্বন, বেনজিন, সালফার ও ফটোকেমিক্যাল অক্সিডেন্টস। জ্বালানির দহন, বনভূমি উজাড় প্রভূতি কারণে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। ঢাকার এমন বায়ু স্বাস্থ্যের ওপর নানান নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ যেমন নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন জটিলতায় পড়ছেন নগরবাসী।
ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বের অন্যতম দূষিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। ফলে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনপ্রতি পাঁচ বছরেরও বেশি আয়ু কমতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এমএস