• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জন্মহার বাড়াতে সাপ্তাহিক ছুটি ৩ দিন করছে জাপান


ফিচার ডেস্ক ডিসেম্বর ১১, ২০২৪, ১২:২৯ পিএম
জন্মহার বাড়াতে সাপ্তাহিক ছুটি ৩ দিন করছে জাপান

ঢাকা: জাপানিরা তাদের কর্মজীবনে কঠোর পরিশ্রম করে থাকেন। তাদের দেশের কঠোর কর্মসংস্কৃতি জন্মহারের নিম্নগতির জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়। তবে জন্মহার বৃদ্ধি করার জন্য দেশটির সরকার সাপ্তাহিক ছুটি দুইদিন থেকে বাড়িয়ে তিনদিন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দেশটিতে সাপ্তাহিক কর্মদিবস হবে চারদিন। 

এছাড়া, আরেকটি নতুন নীতি চালু করা হচ্ছে, যার আওতায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পিতা-মাতারা আংশিক বেতন কাটছাঁটের মাধ্যমে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার সুযোগ পাবেন। কর্মজীবী মায়েদের সহায়তা এবং রেকর্ড-নিম্ন জন্মহার বৃদ্ধি করতেই দেশটি নতুন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

টোকিওর গভর্নর ইউরিকো কোইকে এক নীতিনির্ধারণী বক্তৃতায় বলেন, “আমরা কাজের ধরন পর্যালোচনা করব এবং এমন ব্যবস্থা নেব যাতে কেউ তাদের ক্যারিয়ার ত্যাগ করতে বাধ্য না হয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সন্তান প্রসব বা যত্ন নেওয়ার কারণে কাজ ছাড়ার প্রয়োজন যেন না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশটিতে মাত্র ৭ লাখ ২৭,২৭৭ শিশুর জন্ম হয়েছে। এর ফলে প্রজনন হার ১.২% নেমে এসেছে, যেখানে জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজন ২.১%।

জাপানের সরকার জন্মহার বাড়াতে পুরুষদের পিতৃত্বকালীন ছুটির মতো বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। তবে অনেক সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন, জাপানের কঠোর কর্মসংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় জন্মহারের নিম্নগতির জন্য দায়ী।

অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা দীর্ঘদিন ধরে জাপানের কর্পোরেট সংস্কৃতির একটি সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যেখানে কর্মীরা প্রায়ই স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হন এবং চরম ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হয়-অতিরিক্ত পরিশ্রমে এ মৃত্যুকে জাপানি ভাষায় বলা হয় “কারোশি”।

এছাড়া, নারীরাও প্রায়ই ক্যারিয়ার এবং পরিবারের মধ্যে একটি বেছে নিতে বাধ্য হন, আর জাপানের ওভারটাইম কাজের সংস্কৃতি এই পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তোলে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, জাপানে কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য এখনও প্রবল। গত বছর দেশটির শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণের হার ছিল ৫৫%, যেখানে পুরুষদের ক্ষেত্রে তা ছিল ৭২%।

পশ্চিমা দেশগুলোতে চার দিনের কর্মসপ্তাহ নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এটি কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। তবে জাপানের জন্য এটি এখনো মৌলিক একটি ধারণা। দেশটির অনেক কোম্পানি কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করা সময়কে আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে দেখে।

ইউআর

Wordbridge School
Link copied!