ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জড়িত সাতজনকে শনাক্ত করা গেছে। ঘটনার কয়েকটি ভিডিও থেকে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন- ছাত্রদলের সাঈদ হোসেন ভুঁইয়া, রাজু আহমেদ, রাজন হাসান, হামিদুল্লাহ সালমান ও এম এন সোহাগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহসান লাবিব এবং সাধারণ শিক্ষার্থী আতিক।
সূত্র জানায়, সাঈদ হোসেন ভুঁইয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
অন্যান্যরা হলেন- সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক ছাত্র রাজু আহমেদ, ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজন হাসান, ইংরেজি ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিদুল্লাহ সালমান ও কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এম এন সোহাগ, ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের আতিক।
এক ভিডিওতে দেখা গেছে, নিরাপত্তা শাখায় আটক অবস্থায় একজন লাঠি দিয়ে শামীম আহমেদকে সজোরে আঘাত করছেন। মারধরকারী ওই ব্যক্তি রাজু আহমেদ বলে জানা গেছে। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
ভিন্ন আরেক ভিডিওতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লাবিব আহসানকে দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেট (প্রান্তিক গেট) এলাকায় শামীমকে আটকের পর আহসান লাবিব সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় মাটিতে পড়ে থাকা শামীমকে লাথি দিতে দেখা যায় আতিককে।
এ বিষয়ে আহসান লাবিব বলেন, ‘শামীম মোল্লাকে আটক করার পর অনেকে আমাকে ফোন দেন।আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করি, সে ১৫ তারিখের হামলায় ছিল কি না। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে সোপর্দ করা হলে আমি ইবনে সিনা হাসপাতালে যাই। সেখান থেকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসে ফিরে আসি।’
মারধরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে সাঈদ বলেন, ‘কেউই হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে মারধর করেনি। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি দেখতে গিয়েছিলাম।আর একজন মানুষ, যিনি হেঁটে পুলিশের গাড়িতে গেছেন, আর কিছুক্ষণের মধ্যে মারা গেছেন, এর রহস্য উদঘাটন করা জরুরি।’
এ বিষয়ে রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে শোনার পর সেখানে গেছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি শামীমকে ধমক দিই। তাকে মারধর করিনি।’
রাজন হাসান বলেন, ‘আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম, কিন্তু মারার জন্য সেখানে যাইনি। যারা তালা ভাঙার চেষ্টা করছিল তাদের আমি নিষেধ করেছিলাম।’
এ বিষয়ে হামিদুল্লাহ সালমান বলেন, ‘আমি সন্ধ্যায় হলে ছিলাম। পরে খবর পেয়ে প্রক্টর অফিসে যাই। কিন্তু শামীম মোল্লাকে মারধর করিনি।’
এম এন সোহাগ বলেন, ‘আমি টিউশন থেকে ফেরার পথে হইচই দেখে সেখানে গেছিলাম, কিন্তু মারধর করিনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে।’
সূত্র-কালের কণ্ঠ
আইএ