• ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

এক ধমকে ওসি প্রদীপের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নেন বেনজীর


নিউজ ডেস্ক অক্টোবর ২, ২০২৪, ০৭:৫৪ পিএম
এক ধমকে ওসি প্রদীপের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা নেন বেনজীর

ঢাকা: ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার সম্পদের তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমদ ও তার পরিবারের। সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি বেনজীরের নানা অপর্কমও এখন ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। এবার সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকে ঘিরে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে বেনজীরের।

অভিযোগ আছে, কক্সবাজারের টেকনাফে আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলা থেকে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের (বরখাস্ত) কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঘুস নিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমদ।

সিনহা হত্যার পর একজন পুলিশ সুপারের মাধ্যমে এ টাকা দেন ওসি প্রদীপ। এ বিষয়ে অবগত আছেন এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তাও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সিনহা হত্যার পর বেনজীর স্যার এক ধমকে ওসি প্রদীপ কুমার দাসের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা ঘুস নিয়েছিলেন। প্রদীপের ঘনিষ্ঠ একজন সুপারের মাধ্যমে এ টাকা দেন প্রদীপ। একইভাবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল স্যারও মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন প্রদীপকে বাঁচানোর কথা বলে।

তিনি বলেন, সিনহা হত্যার পর নিজেদের মোবাইল এড়িয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় বেনজীর স্যার ওসি প্রদীপের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় বেনজীর স্যার ওসি প্রদীপকে ধমকের সুরে বলেছিলেন, ক্রসফায়ার বাণিজ্য করে তুমি হাজার কোটি টাকা আয় করেছ। শত শত মানুষকে গুলি করে মেরেছো, এখন আমি তোমাকে কেন বাঁচাব? আমি তো আগেও কয়েকবার তোমাকে বাঁচিয়েছি।

পরে প্রদীপকে হত্যা মামলা থেকে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে শত কোটি টাকা দাবি করেন বেনজীর। এমনকি ক্রসফায়ারে নিহতদের লাশ গুনে গুনে টাকা দিতে হবে বলে ধমক দেন। পরবর্তীতে একজন পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা বেনজীরকে দেন প্রদীপ।

পুলিশের সূত্র বলছে, সেনা কর্মকর্তার হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে প্রদীপকে বাচঁতে না পারলেও যে পুলিশ সুপারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন তাকে বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন বেনজীর। যে অপরাধের কারণে ওই পুলিশ সুপারের শাস্তি বা চারকিচ্যুত হতে পারতেন। 

অভিযোগ আছে, টেকনাফ ক্রসফায়ার বাণিজ্য ও অস্ত্রের মুখে চিহ্নিত মাদক কারবারিদের তুলে নিয়ে বা ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে শত শত কোটি টাকা আদায় করেছেন ওসি প্রদীপ। সেই বাণিজ্য থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমদ মোটা অংকের ভাগ নিতেন বলে জানিয়েছেন তৎকালীন কক্সবাজারে কর্মরত পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফের ওসি থাকাকালীন পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৪৫ জন মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হন। বেশিরভাগ ক্রসফায়ারে বাণিজ্য হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ মামলায় ফাঁসির রায় হয় ওসি প্রদীপের।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বেনজীর আহমদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সূত্র-যুগান্তর

আইএ

Wordbridge School

সংবাদ পত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর

Link copied!