• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

বেতন দ্বিগুণসহ একগাদা সুবিধা পাওয়ার পরও সরকারি চাকুরেদের চাহিদার যেন শেষ নেই!


নিউজ ডেস্ক ডিসেম্বর ২২, ২০২৪, ১২:২১ পিএম
বেতন দ্বিগুণসহ একগাদা সুবিধা পাওয়ার পরও সরকারি চাকুরেদের চাহিদার যেন শেষ নেই!

ঢাকা: সরকারি চাকরিজীবীরা গত দেড় যুগে সবচেয়ে সুবিধাভোগী শ্রেণি। ওপরের নির্দেশনা তারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। সেগুলো নীতি-বিধিবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও কোনো প্রশ্ন তোলেননি। সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখে তারা আস্থা অর্জন করেছেন। সুবিধাভোগী এই শ্রেণির সুবিধার তালিকা বছর বছর দীর্ঘ হয়েছে। সে সবের কোনো সংস্কার হয়নি, পেশাদারিত্বে লাগেনি উন্নতির ছোঁয়া। জনপ্রশাসন বিশ্লেষকরা এ কথা বলেছেন।

ছাত্র আন্দোলনে সরকার বদলের পর যখন সংস্কারের প্রশ্ন সামনে এসেছে তখন কর্মচারীদের এক পক্ষ মানছেন আর এক পক্ষ মানছেন না। যারা মানছেন না তারা সরকারের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। আর যারা স্বাগত জানাচ্ছেন তারাও সুবিধাভোগী। বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আয় নিয়ে চরম দিশাহীন থাকলেও তাদের কোনো হেলদোল ছিল না। দেড় যুগে প্রশাসনকে দিনে দিনে চরম দলীয়করণ করা হলো, তা নিয়েও টুঁ শব্দটি সরকারি কর্মচারীরা করেননি। তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য ২০১৫ সালে স্মার্ট একটি পে-স্কেল দেওয়া হলো যাতে তাদের বেতনভাতা দ্বিগুণ হয়ে গেল। ওই পে-কমিশনের রিপোর্টে বেতন দ্বিগুণ করা ছাড়াও নানা আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব ছিল। বেতন দ্বিগুণ করার পর ধাপে ধাপে সুপারিশকৃত সেসব সুবিধা বাস্তবায়ন করা হয়। সরকারি কর্মচারীদের সন্তানদের লেখাপড়া ভাতা বাড়ানো, টেলিফোন বিল নগদায়ন, ডমেস্টিক এইড অ্যালাউন্সসহ আরও অসংখ্য সুবিধা ধাপে ধাপে বাড়ানো হলো। পরিমাণটা অনেক বেশি হয়ে যাবে বলে এগুলো বেতনের সঙ্গে একই বছর না বাড়িয়ে বিভিন্ন সময় বাড়ানো হয়েছে। সরকারের সেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরও সুবিধা চান। সংস্কারের মাধ্যমে জনসেবা বাড়ুক বা কমুক তাতে তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। সংস্কারকে সামনে রেখে নিজেদের সুবিধা নিশ্চিত করতে নিজেদের সঙ্গে রেষারেষিতে লিপ্ত হয়েছেন কর্মচারীরা।

সম্প্রতি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেতে কর্মকর্তাদের পরীক্ষা দিতে হবে। এই পরীক্ষা নেবে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। ৭০ না পেলে পদোন্নতি পাবেন না। উপসচিব পদে নিয়োগ বা পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের জন্য ৫০ শতাংশ করার সুপারিশ করা হবে। ফলে বর্তমানে উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডার থেকে ৭৫ শতাংশ ও অন্য ক্যাডার থেকে ২৫ শতাংশ নেওয়ার যে রেওয়াজ তা বাতিল হয়ে যাবে। এসব সুপারিশের কথা শুনেই প্রশাসন ক্যাডারের সব পর্যায়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে আলাদা করার যে সুপারিশ সেটিও মানতে নারাজ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডার সংশ্লিষ্টরা।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর ধারণাসূচক এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় লাগাতার ক্ষোভ জানিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার সমিতি এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। নিজেদের পক্ষে না যাওয়ায়ই কেউ এ সংস্কারকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন না।

উপসচিব পদে নিয়োগ বা পদোন্নতির জন্য পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা এবং ৫০ শতাংশ হারে প্রশাসন ক্যাডার ও বাকি ক্যাডারগুলোর কোটা প্রস্তাবে তীব্র বিরোধিতা করছেন প্রশাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সব ক্যাডার কর্মকর্তা। প্রশাসন ক্যাডারের সংগঠন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বাসা) জানিয়েছে, উপসচিব পদে কোটা ৫০ অনুপাত ৫০ করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ তারা মানবেন না। সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছেন, ‘উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের ৭৫ শতাংশ কোটা নিয়ে আদালতের রায় আছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে তো কথা বলা যাবে না।’

অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কোটা নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলাপ করেনি। প্রশাসন ক্যাডার চায় পদোন্নতিতে ৭৫ অনুপাত ২৫ এর যে কোটা প্রচিলত আছে তা না থাকুক। তারা চায় উপসচিব, যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে শতভাগ পদোন্নতি হোক প্রশাসন ক্যাডারের।

বাসা’র দাবি, যুগোপযোগী, নিরপেক্ষ, প্রফেসনাল সিভিল প্রশাসন বিনির্মাণে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারকে আলাদা করে আগের মতো সব পদসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য ক্যাডার/নন ক্যাডার সার্ভিসকে স্ব স্ব কাজের ধরন বিবেচনা করে নিজ সার্ভিসে পদোন্নতির সুযোগসহ ক্যারিয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বিকেন্দ্রীকরণ ও শক্তিশালী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করার আহ্বান জানান তারা।

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. এম মফিজুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে উপসচিব পদে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৭৫ শতাংশ কোটা রেখে অন্যান্য ক্যাডারের জন্য ২৫ শতাংশ কোটা বরাদ্দ রাখা হয়। কিন্তু হাইকোর্ট ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০০২ তারিখে কোটা সংরক্ষণকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে রায় প্রদান করে। তবে ২৪ মে, ২০১০ তারিখ আপিল বিভাগ ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮-এর গেজেট নোটিফিকেশনটিকে বৈধ ঘোষণা করে।

এসব রেফারেন্স দিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে মন্ত্রণালয়গুলোতে ভারসাম্যহীনতা ও একটি ক্যাডারের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডার কারও কাছে জবাবদিহি করে না। কোটায় নিজেরা পদায়িত হয়ে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনে আধিপত্যের মনোভাব দেখায়। একই অবস্থা সচিবালয়সহ অন্যান্য সেক্টরেও। এ যাবৎ যতগুলো কমিশন ও কমিটি হয়েছে তারা প্রজাতন্ত্রের পদসমূহে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের কথা বলেছেন। সুতরাং উপসচিব ও সমমান পদে কোটা পদ্ধতি বাতিলের মাধ্যমে মেধার যথাযথ মূল্যায়ন ও বৈষম্যহীন জনবান্ধব সিভিল প্রশাসন গড়তে সিনিয়র সার্ভিস পুল (এসএসপি) প্রথা পুনরায় চালু করে কোটামুক্ত মেধাবী নিয়োগ দিতে হবে। এসব দাবিতে চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। এর মধ্যে ৪ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ কর্মসূচিও রয়েছে।

স্বাস্থ্য ক্যাডারের কমকর্তাদের দাবি, প্রশাসন ক্যাডার ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি, সুপারনিউমারারি, ইনসিটু ও ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির ব্যবস্থা করে নিজেদের সময়মতো পদোন্নতির সুযোগ তৈরি করে নিয়েছেÑ অথচ অন্য ক্যাডারের ক্ষেত্রে এসব সুবিধা অনুপস্থিত। সংশ্লিষ্ট ক্যাডারকে নিম্নপদে আটকে রেখে প্রতিষ্ঠানসমূহের উচ্চ এক বা একাধিক পদে প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্য চলছে। শুধু প্রশাসন ক্যাডারের জন্য গাড়িঋণ সুবিধা নিশ্চিত করে অন্য ক্যাডারগুলোর সঙ্গে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। এমনকি বিদেশে প্রশিক্ষণ, উচ্চতর গবেষণা ও শিক্ষাবৃত্তির ক্ষেত্রেও চলে এ বৈষম্য।

শিক্ষা ক্যাডার সংশ্লিষ্টরা জানান, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বা পদমর্যাদাক্রম হলো রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের পদের ক্রমবিন্যাস। যার মাধ্যমে প্রোটোকল বা সুপিরিয়রিটি নির্ধারিত হয়। প্রশাসন ক্যাডার ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স নিজেদের সুবিধামতো সংশোধন করে চরম বৈষম্য তৈরি করেছে। বর্তমানে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে প্রশাসন ক্যাডারের ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা প্রটোকল পেলেও অন্য ক্যাডারের ৪র্থ বা ৩য় গ্রেডের কর্মকর্তারাও অবমূল্যায়িত হন। ফলে অন্য ক্যাডারের ব্যক্তিত্ববান কর্মকর্তারা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে গ্রেডভিত্তিক সমতা আনতে হবে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। ২০১৮ সালে কেবলমাত্র উপসচিবদের গাড়ি কেনার জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা ধার দেওয়া (অবচয় মূল্যে) এবং সে গাড়ির জ্বালানি, চালকের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসিক ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু অন্য ক্যাডারের সমপর্যায়ের বা উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ সুবিধা প্রদান করা হয় না। অথচ ২০১৫ এর পে-কমিশনের প্রতিবেদনে শ্রেণিভিত্তিক অবস্থানের পরিবর্তে গ্রেডভিত্তিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি প্রশাসন ক্যাডারের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রেও আপত্তি অনেকের। তারা মনে করেন, আদালত পরিচালনার দায়িত্ব কেবলমাত্র বিচারকেরই থাকা উচিত। তবে মামলার জট কমানো বা দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে সরকার সংশ্লিষ্ট সেক্টরের বিজ্ঞ, অভিজ্ঞ ক্যাডার কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করাতে পারে। মোবাইল কোর্টে যেহেতু বিবাদী বা আইনজীবী থাকে না, তাই এ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রচলিত আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমত্তার অধিকারী হতে হয়। দ্রুত সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট আইন সম্পর্কে তার স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার। সেক্ষেত্রে খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে খাদ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ অথবা লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক ব্যবসা দেখার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে পারেন ।

বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তাজিব উদ্দীন দেশ রূপান্তরকে বলেন, নন-ক্যাডার হতে চাই না। বিগত ৪০ বছরেও শিক্ষা ক্যাডারের সংশ্লিষ্টদের থার্ড গ্রেড পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি। ক্যাডারের বাইরে চলে গেলে কী অবস্থা হবে চিন্তা করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের স্বার্থে মেধাবী ছাত্ররা যাতে শিক্ষা পেশায় আগ্রহী হয় সেজন্য ক্যাডার সার্ভিসে রেখেই এর মর্যাদা বাড়ানো উচিত। শিক্ষা ক্যাডারকে বের করে দিলে সার্বিকভাবে রাষ্ট্রই ভবিষ্যতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

সম্প্রতি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন ও সংস্কার কমিশন প্রসঙ্গে অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, ‘বিভিন্ন সরকার নীতি সংস্কারের জন্য এ রকম আরও কমিশন গঠন করেছিল। সেই প্রতিবেদনগুলোও সেসব সরকারের দ্বারাই বহুলাংশে উপেক্ষিত থেকে গেছে। এ রকম দুটি প্রতিবেদনের কথা মনে পড়ছে। একটি হচ্ছে, শেখ হাসিনার প্রথম সরকার কর্তৃক কমিশনকৃত জনপ্রশাসন সংস্কার-সংক্রান্ত প্রতিবেদন (১৯৯৬-০১) এবং অন্যটি ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক গঠিত শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদন। সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য কোন শাসকগোষ্ঠী কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সেটাই এখনো প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে আছে। প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বাধীন কোনো সরকারের সংস্কার বিষয়ে আন্তরিকতা নিয়ে সামান্যই সন্দেহ করা যায়। বিশেষ করে যেহেতু এই সরকার বাংলাদেশের তরুণদের নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। এত বছর ধরে জাতীয় রাজনীতি যে রোগের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছে, এসব তরুণ এখনো সেই রোগে দূষিত হননি।’

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কতটা বাস্তবায়ন হবে প্রসঙ্গে কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, কাঠামোগত পরিবর্তনের সুপারিশ করবে কমিশন। তবে সব সুপারিশ বাস্তবায়ন হবে কি না এই প্রশ্নে তিনি বলেন, জাল ফেললে সব মাছ ধরা পড়ে না।

ক্যাডার কর্মকর্তাদের মুখোমুখি অবস্থান প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন বিশ্লেষক ফিরোজ মিয়া বলেন, সংস্কার কমিশনের কাজ হলো জনগণের সেবা সহজলভ্য করার পরামর্শ দেওয়া, দুর্নীতি বন্ধের প্রস্তাবনা তৈরি করা, সরকারি চাকরিতে রাজনীতিকীকরণ দূর করার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরা এবং কাঠামোগত ত্রুটি বের করা। সেসব না করে ক্যাডার বৈষম্য দূর করার বিষয়টি তারা ভাবলেন কী করে? রাজনৈতিক শক্তিশালী সরকার ছাড়া এ ধরনের পরিবর্তন বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। চাকরিবিধি না বুঝলে, প্রশাসন না বুঝলে একটা কিছু বলে দিলেই সমাধান আসে না। এটি বরং এই সরকারকে আরও সংকটে ফেলবে। ক্যাডার সার্ভিসে যে দ্বন্দ্ব আসবে তা প্রকট হয়ে উঠবে যা সামাল দেওয়া অসম্ভব। কোটা বাস্তবায়ন বা পরীক্ষা ও দুই ক্যাডারকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে এই সংস্কার কমিশনই সব  গোলমাল করে নিজেদের কাজে পিছিয়ে যাবে।

বিসিএস ক্যাডারদের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, আমলারা আছেন কামড়া-কামড়ি নিয়ে, কে কত সুবিধা পাবেন। নিজেদের সুবিধার পাল্লা ভারী করা ছাড়া অন্য কোনো ভাবনা তাদের নেই। সব সুবিধা পাওয়ার পর তাদের আরও পাওয়ার চিন্তা। এদের মাথায় জনগণ বলে কিছু নেই। জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে এদের কোনো পরামর্শও নেই।

সূত্র: দেশ রূপান্তর

Wordbridge School

সংবাদ পত্রের পাতা থেকে বিভাগের আরো খবর

Link copied!