• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

দেশে নতুন এইডস রোগী ১২৭৬, মৃত্যু ২৬৬


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩, ০৩:৫৪ পিএম
দেশে নতুন এইডস রোগী ১২৭৬, মৃত্যু ২৬৬

ঢাকা : দেশে সাড়ে তিন দশকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ এইডস রোগী শনাক্ত এবং এই রোগে মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। চলতি বছরে বাংলাদেশে নতুন করে ১ হাজার ২৭৬ জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ২৬৬ জন। এই সংখ্যা দেশে ১৯৮৯ সালের পর, অর্থাৎ ৩৪ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

এর আগে এইডস রোগী ও মৃত্যু সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল গত বছর। সে বছর নতুন রোগী শনাক্ত হয় ৯৪৭ জন এবং মারা যায় ২৩২ জন। সে হিসাবে চলতি বছর এইডস রোগী বেড়েছে ২৭ শতাংশ এবং মৃত্যু ১৩ শতাংশ।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর নিপসমে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি। কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহফুজুর রহমান সরকার অনুষ্ঠানে এ বছরের প্রতিবেদন তুলে ধরেন।

অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৮৪ জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ২ হাজার ৮৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে এইচআইভি ভাইরাস বহনকারী মানুষের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি। সেই হিসাবে এখনো প্রায় ৫ হাজার রোগী শনাক্তের বাইরে রয়েছে, যা মোট রোগীর ৩৩ শতাংশ।

অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর শনাক্ত রোগীর মধ্যে ১ হাজার ১১৮ জন বাংলাদেশি। বাকি ১৫৮ জন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করা রোহিঙ্গা। আক্রান্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে, ৩৪২ জন। এরপর চট্টগ্রামে ২৪৬, রাজশাহীতে ১৭৫, খুলনায় ১৪১, বরিশালে ৭৯, সিলেটে ৬১, ময়মনসিংহে ৪০ ও রংপুর বিভাগে ৩৪ জন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনো এইডস নিয়ন্ত্রণে তিনটি লক্ষ্য পূরণের মধ্যে দুটিতেই বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। এইডস মোকাবিলায় ২০৩০ সালের মধ্যে ৯৫-৯৫-৯৫ লক্ষ্য পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে ইউএনএইডস; অর্থাৎ দেশে আনুমানিক যত রোগী আছে, তাদের মধ্যে ‘৯৫’ শতাংশকে ২০৩০ সালের মধ্যে শনাক্ত করতে হবে, শনাক্ত রোগীর ‘৯৫’ শতাংশকে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে এবং চিকিৎসার আওতায় আসা রোগীদের মধ্যে ‘৯৫’ শতাংশের মধ্যে ভাইরাল লোড সহনীয় মাত্রায় আনতে হবে, যাতে তাদের ভেতরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না কমে যায়; অর্থাৎ ওষুধের কার্যক্ষমতার ভেতরে আনতে হবে। এই তিন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে এ বছর পর্যন্ত প্রথমটি ৭৩ শতাংশ, দ্বিতীয়টি ৭৫ শতাংশ ও তৃতীয়টি ৯০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।

এখন পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর ৮৯ শতাংশ বা ১ হাজার ১৩৭ জন চিকিৎসার আওতায় এসেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮৫০, নারী ২৭৮ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৯ জন। এইডস আক্রান্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে ৯৮৮, অর্থাৎ ৮৮ শতাংশ রোগী চিকিৎসা পাচ্ছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৯২, নারী ১৮৭ ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ৯ জন। কক্সবাজারের ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গা রোগীদের মধ্যে চিকিৎসার আওতায় এসেছে ৯৪ শতাংশ। তাদের মধ্যে পুরুষ ৫৮ ও নারী ৯১ জন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর এবং আবদুন নূর তুষার উপস্থিত ছিলেন।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!