• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

জরায়ুমুখ ক্যান্সারের নতুন টিকা ‘সেকোলিন’ অনুমোদন দিল ডব্লিউএইচও


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৪, ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম
জরায়ুমুখ ক্যান্সারের নতুন টিকা ‘সেকোলিন’ অনুমোদন দিল ডব্লিউএইচও

ঢাকা : জরায়ুমুখ ক্যান্সারের আরেকটি এইচপিভি (হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস) টিকার অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা (ডব্লিউএইচও)। ‘সেকোলিন’ নামের একক ডোজের এই টিকা তৈরি করেছে চীনের ইনোভ্যাক্স কোম্পানি। বাংলাদেশে মানবদেহে এই টিকার পরীক্ষা করেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের (আইসিডিডিআর,বি) বিজ্ঞানীরা।

২০২১-২০২৩ সাল পর্যন্ত তিন বছর আইসিডিআর,বির চাঁদপুর মতলবে এই ট্রায়াল করা হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা পাথ ও ঘানার বিজ্ঞানীরাও আলাদাভাবে এই টিকার পরীক্ষা করে। পরে সেটি জনসাধারণের মাঝে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর ফলে বিশ্বে এখন পর্যন্ত এই ক্যান্সারের চারটি টিকার অনুমোদন দিল সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) আইসিডিডিআর,বি এই টিকার অনুমোদনের তথ্য জানায়।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-কে যৌক্তিক বললেন সারজিসচাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২-কে যৌক্তিক বললেন সারজিস
সংস্থার বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বে জরায়ুমুখের ক্যান্সারে প্রতি দুই মিনিটে একজন নারী মারা যায় এবং এই মৃত্যুর ৯০ শতাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে ঘটে। চাহিদা অনুপাতে টিকার সংকটের কারণে এখন বাংলাদেশে কিশোরীদের এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সব বয়সী নারীর জন্যই এই টিকা প্রয়োজন। এই রোগের নতুন ভ্যাকসিনের অনুমোদন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এখন সরকারের উচিত হবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে এই টিকা প্রয়োগের ব্যবস্থা করা।

আইসিডিডিআর,বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও এই গবেষণার অন্যতম প্রধান গবেষক ড. কে জামান বলেন, আমাদের গবেষণায় একক ডোজ ভ্যাকসিন হিসেবে ‘সেকোলিন’ এর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা প্রমাণ হয়েছে। এর ফলে ভ্যাকসিন সরবরাহে ঘাটতি আছে এমন দেশগুলোর জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি হলো। এরকম যুগান্তকারী কাজের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা একটি গর্বের মুহূর্ত। আমরা আশা করি এটি এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচিতে মানুষের আস্থা বাড়াবে।


এ ব্যাপারে আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার ১০-১৪ বছর বয়সী বা ৫ম-৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মেয়েদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দিচ্ছে। নতুন আরেকটি টিকার অনুমোদন জরায়ুমুখের ক্যান্সার থেকে আমাদের মেয়েদের রক্ষা করার জন্য খুবই ভালো একটি সুযোগ। এই রোগের বিরুদ্ধে টিকাই সবচেয়ে ভালো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আমি সব বাবা-মা এবং অভিভাবকদের অনুরোধ করব যেন তারা তাদের মেয়েদের এই জীবন রক্ষাকারী টিকা প্রদান নিশ্চিত করেন। এটি শুধু বিনামূল্যে পাচ্ছে এমন মেয়েদের জন্য নয়, বরং ঝুঁকিতে থাকা প্রত্যেক নারীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকাদান কর্মসূচির কর্মকর্তারা জানান, সরকার বিনামূল্যে দেশের সাত বিভাগে ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দিচ্ছে। এর আগে গত বছর ঢাকা বিভাগের প্রায় ১৫ লাখ কিশোরীকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু কিশোরী নয়, দেশে সব বয়সী নারীদের জন্যই এই টিকা প্রয়োজন। কারণ নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী মারা যান। নতুন টিকার অনুমোদনের ফলে চাহিদা অনুপাতে টিকার সরবরাহ বাড়বে।

অধিদপ্তর জানায়, বিশ্বে বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত যে তিনটি এইচপিভি টিকা পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো হলো- বেলজিয়ামের জেএসকে কোম্পানির তৈরি সারভিক্স, যুক্তরাষ্ট্রের মার্ক অ্যান্ড কোং এর তৈরি গার্ডাসিল-৪ ও একই কম্পানির গার্ডাসিল-৯। সেকোলিন অনুমোদন পাওয়া একক ডোজের চতুর্থ টিকা।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!