ঢাকা: তিন দশকের বেশি সময় ধরে এদিনটার প্রতীক্ষা করেছেন জো বাইডেন। অবশেষে এল সেই মুহূর্ত। ৪৬তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। তার সঙ্গে উপ রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্বভার নিলেন কমলা দেবী হ্যারিস।
কোভিড বিধিনিষেধ মেনে ছিমছাম অনুষ্ঠানে আগামী চার বছরের জন্য এই গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করলেন ৭৮ বছর বয়সী জো বাইডেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১০.৪৫ নাগাদ মার্কিন রাজনীতিতে সূচনা হল বাইডেন যুগের।
এর আগে ওবামার উপ রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২০০৮-২০১৬ দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কিন্তু এবার চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। কোভিডের লড়াই তো আছেই, সামলাতে হবে দুর্বল হয়ে পড়া অর্থনীতিকে। ট্রাম্প আমলে কলেবরে বেড়েছে চিনের শক্তি। একই সঙ্গে আছে রাশিয়ার রক্তচক্ষু। এছাড়াও ট্রাম্পের জমানায় সারা বিশ্বেই কমেছে মার্কিন প্রভাব। একের পর এক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আমেরিকাকে হাসির খোরাক করে তুলেছিলেন ট্রাম্প। এই সবকে সামলে এগোতে হবে ডেলাওয়্যারের জো-কে।
১৯৭২ সালে প্রথমবার ডেলাওয়্যার থেকে সেনেটে যান জো বাইডেন। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্য ও পরে চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। একই সঙ্গে সেনেট জুডিশিয়ারি কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন তিনি। প্রথমবার ১৯৮৮ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার দৌড়ে নাম লেখান তিনি। এরপর ২০০৮ সালেও ব্যর্থ হন। কিন্তু প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি ব্যারাক ওবামা নিজের ডান হাত হিসেবে বেছে নেন ছয় বারের সেনেটরকে। ওবামার সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে মেডিকেয়ার থেকে ট্যাক্স রিলিফ অ্যাক্ট, বিভিন্ন ইস্যুতে সাফল্য পান তিনি।
তৃতীয় বার রাষ্ট্রপতি হওয়ার লড়াইয়ে যদিও নিজের দলের মধ্যে কার্যত ওয়াকওভার পান তিনি। বার্নি স্যান্ডার্সের সমাজতন্ত্র দিয়ে যে ভোটে জেতা যাবে না তা সম্যক বুঝেছিল ডেমোক্র্যাট ভোটাররা। এলিজাবেথ ওয়ারেন বা কমলা হ্যারিসের ওপরও ভরসা করতে পারেননি তাঁরা। ট্র্রাম্পকে রুখতে তারা তাই বিশ্বাস রাখেন ঘরের ছেলে ইমেজ সম্পন্ন জো বাইডেনের ওপর। এক শ্রেণির শ্বেতাঙ্গ ভোটকে নিজের দিকে এনে সহজেই ট্রাম্পকে হারিয়ে ৩০৬ ইলেকটরাল ভোট পেয়ে রাষ্ট্রপতি হলেন বাইডেন। তবে তার জয়ের নেপথ্য বড় ভূমিকা ছিল কমলা হ্যারিসেরও।
প্রথমবার কোনও ভারতীয় ও আফ্রিকান বংশোদ্ভূত উপরাষ্ট্রপতি হলেন। এই প্রথমবার কোনও মহিলা হলেন উপ রাষ্ট্রপতি। ফলে দুই হাত উপুড় করে মহিলারা, কৃষ্ণাঙ্গরা ও এশিয়ানরা ভোট দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটদের। আজ এই ঐতিহাসিক মুহূর্তেও তাঁর মা-র কথা স্মরণ করেছেন কমলা। সব ছেড়ে অনিশ্চিতের পথে যেদিন তামিলনাড়ু থেকে আমেরিকা যান শ্যামলা গোপালন, সেদিন তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি যে তাঁর মেয়ে একদিন ইতিহাস গড়বে। সেই জন্যই হয়তো ল্যান্ড অফ ড্রিমস বলা হয় আমেরিকাকে। সূত্র-হিন্দুস্থান টাইমস
সোনালীনিউজ/এমএইচ
আপনার মতামত লিখুন :