• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা ‘গণহত্যা’, স্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ২১, ২০২২, ০৩:৩৩ পিএম
রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা ‘গণহত্যা’, স্বীকার যুক্তরাষ্ট্রের

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়ন শুরু হলে প্রায় ১১ লাখ মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ফাইল ছবি

ঢাকা : মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর চালানো নিপীড়নকে প্রথমবারের মতো ‘জোনোসাইড’ বলে অভিহিত করলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন।    

ওয়াশিংটন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ‘প্রমাণ পেয়েছে’ বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা।

সোমবার (২১ মার্চ) ওয়াশিংটন ডিসির ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই আনুষ্ঠানিক অবস্থানের ঘোষণা দেবেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে - এই খবর প্রথম প্রকাশ করে রয়টার্স।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নির্মমতা চালানো হয়েছে, জাতিসংঘ তাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলে আসছিল শুরু থেকেই। তবে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের সেইসব ঘটনাকে ‘জেনোসাইড’ বলতে দ্বিধায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের দক্ষিণ-পশ্চিমে মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর ব্যাপক দমন-পীড়ন শুরু হলে প্রায় ১১ লাখ মানুষ সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ওই ঘটনায় মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনার প্রস্তাব করে জাতিসংঘ।

রোববার (২০ মার্চ) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য ও ডেমোক্র্যাট দলীয় সিনেটর জেফ মার্কলে বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত বর্বরতাকে বাইডেন প্রশাসন শেষ পর্যন্ত গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় আমি তাদের প্রশংসা করছি৷ এ  ঘোষণাটি দীর্ঘ প্রতিক্ষিত হলেও শেষ পর্যন্ত তা এসেছে এবং এই নিষ্ঠুর শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহির আওতায় আনতে এটা একটি শক্তিশালী ও বিশেষভাবে গুরুত্ববহ পদক্ষেপ।

ওরেগন অঙ্গরাজ্যের এই সিনেটর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই এক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে নেতৃত্বে আসতে হবে এটা স্পষ্ট করার জন্য যে এ ধরনের নৃশংসতা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না, ধামাচাপা পড়ে যাবে না, সেটা যেখানেই ঘটুক না কেন।

২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের উত্তরের রাখাইন রাজ্যে ভয়ানকভাবে, বিস্তৃতভাবে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেখানকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করেছে এবং রোহিঙ্গাদের আবাস থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।

মানবাধিক লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত হিসেবে মিয়ানমারের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা মিন অং হ্লা্য়িংসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা চলছে। দ্য হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ২০১৯ সালে মামলাটির প্রাথমিক শুনানি শুরু হয়। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নভেম্বরে আইসিজেতে মামলাটি করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ ২০১৮ সালে এই উপসংহারে পৌঁছায় যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে তখন ওয়াশিংটন এই নৃশংসতাকে ‘জাতিগত নির্মূল’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এই শব্দবন্ধের কোনো আইনগত সংজ্ঞা নেই। সূত্র : ডয়চে ভেলে ও এএফপি

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!