ঢাকা : ইন্দোনেশিয়ার ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে পশ্চিম জাভার সিয়ানজুর শহরে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা স্পষ্ট হতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে, সরকারি হিসাবেই মৃতের সংখ্যা ২৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে আর নিখোঁজ ১৫০ জনেরও বেশি।
সোমবারের ভূমিকম্পটির উৎপত্তি ছিল পর্বতবেষ্টিত সিয়ানজুর শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের সময় ভূমিধসের ঘটনাও ঘটে।
ভূমিধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া পশ্চিম জাভার গ্রামগুলোতে বুধবার হেলিকপ্টার থেকে ত্রাণ ফেলা হবে। বহু মানুষ তাদের নিখোঁজ স্বজনদের খবর জানার জন্য শঙ্কিতভাবে অপেক্ষা করে আছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ভূমিকম্পে পশ্চিম জাভার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর একটি চুগেনাং। এখানে অন্তত একটি গ্রাম ভূমিধসে চাপা পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুধবারের পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় এই জেলাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
ভূমিধসে সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানকার আরও দুটি জেলা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। বুধবার এ দুটি জেলায়ও হেলিকপ্টার থেকে জরুরি ত্রাণ ফেলা হবে।
ভূমিধস পরিষ্কার করতে কর্তৃপক্ষ আরও ভারী মেশিনপত্র আনার প্রস্তুতি নিয়েছে। গণমাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতে লোকজনকে কোদাল, বেলচা ও শাবল দিয়ে মাটি সরানোর চেষ্টা করতে দেখা গেছে।
নিখোঁজ ছয় আত্মীয়ের সন্ধানে থাকা জইনুদ্দিন বলেন, “এটা যদি শুধু একটা ভূমিকম্প হতো তাহলে শুধু বাড়িগুলো ধসে পড়ত, কিন্তু ভূমিধসের কারণে এটি আরও মারাত্মক হয়েছে। এই আবাসিক এলাকায় আটটি বাড়ি ছিল, সবগুলোই চাপা পড়ে হারিয়ে গেছে।”
উদ্ধারকারী দলগুলোকে সাহায্য করার জন্য দুর্যোগস্থলে এক হাজারেরও বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযানের প্রধান হেনরি আলফিয়ান্দি জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা যত দ্রুত সম্ভব আটকাপড়াদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। ভূমিকম্পের তিন দিন পর আটকাপড়াদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা বিবর্ণ হতে শুরু করেছে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
সড়ক পথে যাওয়া সম্ভব না এমন দুটি গ্রামে হেলিকপ্টার থেকে খাবার ও পানি ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম জাভার গভর্নর রিদওয়ান কামিল জানান, পার্বত্য এলাকা হওয়ায় সেখানে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, কর্মকর্তারা খুব কষ্ট করে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে যাচ্ছেন।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ দেশগুলোর একটি ইন্দোনেশিয়া। এখানকার উপকূলবর্তী সাগরগুলোতে নিয়মিতভাবে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়।
কিন্তু অল্প গভীরে উৎপত্তি হওয়া সোমবারের ভূমিকম্পটি ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকায় আঘাত হানে আর পরে আরও ১৬০টি পরাঘাত হয়।
ভূমিকম্পটি অল্প গভীরে উৎপত্তি হয়ে ঘনবসতিপূর্ণ একটি এলাকায় আঘাত হানে আর পরে ১৬০টি পরাঘাত হয়।
এতে দুর্বল কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা বহু বাড়ি ধসে পড়ায় অনেক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। সঙ্গে বহু স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট জোকো উয়িদোদো সিয়ানজুরের দুর্গত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে পুনর্নির্মাণ উদ্যোগে ভূমিকম্প নিরোধক বাড়ি তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :