ঢাকা : ২০১৪ সালে মেক্সিকোতে অপহরণ হয় ৪৩ জন ছাত্র যাদের খোঁজ মেলেনি ৯ বছরেও। তবে সম্প্রতি এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে যে ওই অপহরণের সাথে জড়িত খোদ দেশটির পুলিশ। এমনকি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারাও জানতেন অপহরণকৃত ছাত্রদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইন্টারডিসিপ্লিনারি গ্রুপ অফ ইন্ডিপেনডেন্ট এক্সপার্টস (জিআইইআই) এক রিপোর্টে এই দাবি জানিয়েছে। সংস্থাটি ইন্টার-আমেরিকান কমিশন অন হিউম্যান রাইটস দ্বারা নিযুক্ত একটি প্যানেল যাকে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। এক খবরে জানায় বার্তাসংস্থা দ্য গার্ডিয়ান।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অপহরণের পর মেক্সিকোর সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি মিনিটে মিনিটে জানত, ছাত্ররা কোথায় ছিল।
চূড়ান্ত তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদন উপস্থাপনের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার সদস্য কার্লোস বেরিসটাইন বলেন, “প্রশাসনের সকলেই পুলিশকে ছাত্রদের অদৃশ্য করার জন্য সহযোগিতা করেছিল।”
রিপোর্টে স্পষ্ট করে বলা হয় যে, সেনাবাহিনী, নৌসেনা এবং পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানতেন ওই ছাত্রদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তারা তা জানাননি এবং ছাত্রদের উদ্ধারের ব্যবস্থাও করেননি। ওই কর্মকর্তারা সরাসরি ড্রাগ মাফিয়াদের সঙ্গে যুক্ত বা ওই চক্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
রিপোর্টে দাবি জানানো হয়, ওই ঘটনার পর সেনাবাহিনী এবং নৌসেনা যে কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে তা ভুয়া। এবং অভিযানে যাদের আটক করা হয়েছে ওই ব্যক্তিদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ওই ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতনের মাধ্যমে ভুল জবানবন্দি নেয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে দাবি করে সংস্থাটি।
উল্লেখ নিখোঁজ ৪৩ জন ছাত্র ছিল আয়োজিনাপা গ্রামীণ শিক্ষক কলেজের ছাত্রদের একটি বৃহত্তর দলের অংশ যারা ২০১৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে গেরেরোর ইগুয়ালা শহরে অপহরণের শিকার হয়েছিল। বহু তদন্তের পরেও তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। অনেক পরে তিনজন ছাত্রের দেহাবশেষ পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার এই রিপোর্ট প্রকাশ পাওয়ার পর আলোড়ন পড়ে যায় মেক্সিকোতে। অনেক আগে থেকেই দেশটির প্রশাসনের সঙ্গে ড্রাগ মাফিয়াদের যোগাযোগের অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এই অভিযোগের ভিত্তিতে কোন মন্তব্য করতে নারাজ মেক্সিকোর সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনী। অন্যাদিকে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রদের নিখোঁজ হওয়ার তথ্য অস্বীকার করে আসছে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই