ঢাকা : পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে শস্যভাণ্ডার হিসাবে পরিচিত দেশটির তিনটি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ- হেইলংজিয়াং, জিলিন এবং লিয়াওনিং। চীনের শস্য উৎপাদনের এক পঞ্চমাংশেরও বেশি উৎপন্ন করে এই তিন প্রদেশ।
কিন্তু কয়েকদিনের টানা প্রবল বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে প্রদেশগুলোতে। এতে করে চীনের কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে এবং দেখা দিয়েছে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা।
চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার বরাতে রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় বার্তাসংস্থা সিএনএন।
সিনহুয়া জানায়, চীনের শস্য উৎপাদনকারী অঞ্চল হেইলংজিয়াং প্রদেশে ২৫টি নদীতে পানি বিপদসীমার উপরে অতিক্রম করছে। নদীর পানি উপচে ডুবে গেছে কৃষি জমি, ধানের ক্ষেত। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবজির গ্রিনহাউজ এবং কল-কারখানার।
চীনের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জিলিন এবং হেইলংজিয়াং প্রদেশের বন্যার জন্য জরুরি সতর্কতা ৩ নম্বর স্তরে উন্নীত করে।
এদিকে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির এক মুখপাত্র জানায়, হেইলংজিয়াং-এর প্রাদেশিক রাজধানী হারবিনে, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯০ হাজার হেক্টরের বেশি ফসল এবং এক লাখ ৬২০০০ এরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
সিনহুয়া জানায়, শাংঝি শহরে, ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বৃষ্টিপাতের কারণে ৪২ হাকার ৫৭৫ হেক্টরেরও বেশি ফসল ধ্বংস হয়েছে। এ ছাড়া চীনের শস্যভাণ্ডার হেইলংজিয়াংয়ের আরেকটি প্রধান ধান উৎপাদনকারী শহর উচাং শহরেও অসংখ্য গ্রাম এবং কৃষি জমির বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেখানকার কর্তৃপক্ষ এখনও ক্ষতির পরিমাণ গণনা করছে।
এর আগে গেল মে মাসের হেনান প্রদেশে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় মারাত্মক ক্ষতি হয় দেশটির গম উৎপাদনে। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো অনুসারে, সেই বন্যায় চীনের গ্রীষ্মকালীন গমের উৎপাদন ০.৯ শতাংশ কমেছে যা সাত বছরের মধ্যে প্রথম পতন।
এদিকে চীনে জিলিন প্রদেশের শুলান শহরে রবিবার আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিহতদের মধ্যে শহরের ডেপুটি মেয়র সহ তিনজন স্থানীয় কর্মকর্তা ছিলেন, যারা গত সপ্তাহে উদ্ধার অভিযানের সময় বন্যার পানিতে ভেসে যান।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :