ঢাকা: মরক্কোর মধ্যাঞ্চলে গত শুক্রবার রাতে আঘাত হানা ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আজ সোমবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ১২২ জনে দাঁড়িয়েছে। সেইসঙ্গে আহতের সংখ্যাও দুই হাজার ৪০০ ছাড়িয়েছে। খবর আল জাজিরার।
আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মারাকেশ শহর ছাড়াও দক্ষিণের কিছু শহরে বেশি মানুষ মারা গেছে। সেইসঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষ তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।
নিখোঁজদের উদ্ধারে তল্লাশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। মারাকেশে ছুটি কাটাতে যাওয়া ব্রিটিশ নাগরিক আযা লেমার বিবিসিকে বলেন, ‘ভূমিকম্পের প্রথম ধাক্কাটি যখন অনুভূত হয়, তখন শহরের রাস্তায় আমি হাঁটছিলাম। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম শহরে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি অনুভব করছিলাম যে মাটি কাঁপছিল। দেখতে পাচ্ছিলাম যে রাস্তার পাথর সরে যাচ্ছে। কয়েক সেকেন্ড আগে পার করে আসা একটি বাড়িকে দেখছিলাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে।’
ভূমিকম্পের সময় মারাকেশ থেকে ২২০ কিলোমিটার দূরের বন্দর নগর কাসাব্লাঙ্কাতেও কম্পন অনুভূত হয়।
কাসাব্লাঙ্কা শহরের একজন বাসিন্দা লা মাতিন পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘ওই সময় আমি ঘুমাচ্ছিলাম। আমার অ্যাপার্টমেন্টের দরজা কেঁপে ওঠে। আমি ভেবেছিলাম চোর এসেছে। এর কিছু মুহূর্তেই শুনি প্রতিবেশীরা চিৎকার করছে। এরপর আমরা বের হয়ে আসি বাড়ি থেকে। এখন অনেক মানুষই মানুষ খোলা জায়গায় থাকছে। সবাই ভয় পাচ্ছে আরও একটি কম্পনের। পাশাপাশি চোর-ডাকাতের আতঙ্কও রয়েছে।’
মরক্কোর গত শুক্রবারের ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল অ্যাটলাস পর্বতমালার মধ্যে। ওই অঞ্চলে এমন অনেক দুর্গম গ্রাম রয়েছে যেখানে পৌঁছানো যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। তাই এই ভূমিকম্পের আসল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কী, তা নিশ্চিতভাবে জানতে বেশ কয়েকদিন লেগে যাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল রোববারও দেশটিতে ৪ দশমিক ৫ মাত্রার কম্পন অনুভূত হয়েছে।
আব্দেলহাক আল আমরানি সংবাদসংস্থা এএফপিকে বলেন, মানুষ ভীত ও আতঙ্কগ্রস্ত। শিশুরা কাঁদছে ও তাদের অভিভাবকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এমএস