ঢাকা : ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার বিরুদ্ধে ইরানকে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তেহরান জড়িয়ে পড়লে গাজার লড়াই আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেবে, বিরাজ করা এমন শঙ্কার মধ্যেই তেহরানকে এ সতর্কবার্তা দিলেন বাইডেন।
গত শনিবার ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন আক্রমণের পর থেকে ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ব্যাপক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এ বাহিনীটি জানিয়েছে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১২০০ জন নিহত ও ২৭০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা বহু মানুষকে বন্দি করে নিয়ে গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং প্রায় ৫৬০০ জন আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে প্রতি ওয়াশিংটনের স্থায়ী সমর্থন তুলে ধরতে নিজের শীর্ষ কূটনীতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়েছেন বাইডেন। সফরে ব্লিনকেন হামাসের হাতে বন্দি আমেরিকানসহ অন্যান্যদের মুক্তি ও যুদ্ধ যেন আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে চাইবেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার ব্লিনকেনের ইসরায়েলে পৌঁছানোর কথা। সেখান থেকে জর্ডানে যাবেন তিনি। এবারের সফরে তিনি ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে যাবেন না, সেখানে সাধারণত তার সঙ্গে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাক্ষাৎ হয়।
এদিকে ফিলিস্তিনি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবার ব্লিনকেনের সঙ্গে আব্বাসের সাক্ষাৎ হবে। আব্বাস বৃহস্পতিবার জর্ডানের বাদশা আব্দুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আম্মান যাবেন বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
বুধবার ওয়াশিংটনে ইহুদি সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে এক গোলটেবিল বৈঠকে বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েলের কাছে মার্কিন সামরিক জাহাজ ও আকাশযান মোতায়েন ইরানের প্রতি ‘একটি সংকেত হিসেবে দেখা উচিত’। ইরান ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও লেবাননের হিজবুল্লাহকে সমর্থন দিয়ে আসছে।
আমরা ইরানিদের কাছে এটি পরিষ্কার করেছি: সতর্ক থাকুন, বলেছেন বাইডেন।
হামাস যোদ্ধারা ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযানের’ পরিকল্পনা করছে, ইরান সম্ভবত এটি জানত। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলোতে দেখা গেছে, গাজা থেকে হামাস ইসরায়েলে যে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে তাতে ইরানের কিছু নেতাও বিস্মিত হয়ে গেছেন।
ইরান জানিয়েছে, তারা হামাসের এই হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল না।
বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান হামাস-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে আলোচনা করেছেন। চীনের মধ্যস্থতায় তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে ফের কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু হওয়ার পর এই প্রথম এ দুই নেতা পরস্পরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বললেন।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ বন্ধ করা দরকার’ - এই নিয়ে আলোচনা করেছেন রাইসি ও মোহাম্মদ।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এসপিএ বলেছে, সৌদ যুবরাজ নিশ্চিত করেছেন যে সৌদি আরব চলমান সংঘাতের বিস্তৃতি থামাতে সব আন্তর্জাতিক ও অঞ্চলিক পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সম্ভাব্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :