ঢাকা : সমলিঙ্গে বিয়ের আবেদনে টানা ১০ দিনের শুনানির শেষে অবশেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিল ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।
এই বিবাহের আইনি স্বীকৃতি সংক্রান্ত রায় ঘোষণার সময় সমলিঙ্গ সম্পর্ককে স্বীকৃতি দিলেও বিয়ের পক্ষে রায় দেননি বিচারপতিরা। এ বিষয়ে কেন্দ্রের কমিটিকে পদক্ষেপ নিতে বলেছে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। আইনসভার হাতেই বিষয়টি ছেড়ে দিয়েছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টানা ১০ দিনের শুনানির শেষে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এ রায় দেন।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, সমলিঙ্গ সম্পর্কের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য কেন্দ্রের একটি কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। তার মাধ্যমে ওই সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষিত করা হবে।
রায় পড়ে শোনানোর সময় প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি কোনও অনড়, অটল বিষয় নয়। বিবাহে বিবর্তন আসে। বিবাহ বর্তমানে যে স্বীকৃতি পেয়েছে, আইন না থাকলে তা সম্ভব হত না।“
এ সময় সমকামকে শহুরে বিষয় নয় বলেও উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।
সমকামী কিংবা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের যে কোনও মানুষকেই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি জানান, এই সম্প্রদায়ের কাউকে তাঁদের যৌন পরিচয় জানার জন্য থানায় তলব করা যাবে না। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলে তাঁদের সেখানে জোর করে ফেরানো যাবে না। এছাড়া এই সম্প্রদায়ের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণের আগে পুলিশকে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।
সমলিঙ্গে বিবাহ নিয়ে রায় ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা প্রত্যেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।“
কোর্টে বিচারপতি ভট্ট তাঁর রায় পড়ে শোনাতে গিয়ে বলেন, “কোনও বিয়ের স্বীকৃতি আইন ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু বিয়ের বিষয়ে আইন বিচারব্যবস্থা আনতে পারে না।“
এছাড়া আরেক বিচারপতি নরসিংহও বলেন, “বিয়ের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া সাংবিধানিক ভাবে অনুমোদনযোগ্য নয়।“
টানা ১০ দিনের শুনানি পর্বের শেষে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ১১ মে ১৭ অক্টোবর রায় ঘোষণার কথা জানায়। এই সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্য সদস্যেরা হলেন, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি এস নরসিংহ।
এমটিআই