ঢাকা : ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলায় গাজায় তীব্র সংকটের পরিস্থিতিতে ‘মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সংঘাতে বিরতির’ আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব এনেছে ব্রাজিল।
রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার (১৮ অক্টোবর) ওই প্রস্তাবের ওপর ভোট হতে যাচ্ছে। সংঘাত বিরতি দিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে সেখানে।
কূটনীতিকরা বলছেন, মঙ্গলবার গাজার একটি হাসপাতালে বোমা বর্ষণে কয়েকশ মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় সংযুক্ত আরব আমিরাত ও রাশিয়ার অনুরোধে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে নিরাপত্তা পরিষদে।
হাসপাতালে ‘গণহত্যা’ চালানোর জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে দূষছেন জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের দূত রিয়াদ মনসুর। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তবে ওই হামলার পেছনে ফিলিস্তিনের ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীকে দায়ী করছেন জাতিসংঘে ইসরায়েলের দূত গিলাড এরদান। তবে ইসলামিক জিহাদ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ব্রাজিলের খসড়া প্রস্তাবে সোমবার ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আরও সময় দিতে ২৪ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বুধবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল সফরকে কেন্দ্র করে ফের সময় পিছিয়ে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবথেকে বড় মিত্র ইসরায়েল। হামাসের হামলার পর থেকে দেশটি ইসরায়েলের পাশে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় জানিয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে যে পাঁচটি দেশের ভিটো ক্ষমতা রয়েছে তার একটি যুক্তরাষ্ট্র। নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব উত্থাপন করলে পাঁচটি দেশের কোনো একটি ভিটো দিলে তা বাতিল হয়ে যায়। ফলে ব্রাজিলের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র ভোট দেবে কিনা, সেটি অস্পষ্ট।
সংঘাতের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূখণ্ড ছেড়ে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। এরইমধ্যে ৫ লাখের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে সরে গেছে দক্ষিণে। নিরাপত্তা পরিষদে আনা প্রস্তাবে ইসরায়েলেন নাম না উল্লেখ করে সেই আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে রাশিয়ার আনা এক প্রস্তাব সোমবার নিরাপত্তা পরিষদে ভিটোর কারণে বাতিল হয়ে যায়। ব্রাজিলের খসড়ায় রাশিয়ার ওই প্রস্তাবেরই বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে যুদ্ধ বিরতির পরিবর্তে গাজায় মানবিক সহায়তা দিতে সংঘাতের ‘মানবিক বিরতি’ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসরায়েল গাজাকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রেখেছে। চলছে বোমাবর্ষণ। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ৩০০ ইসরায়েলির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূলের অঙ্গীকার করেছে ইসরায়েল। তাদের পাল্টা আক্রমণে অন্তত ৩ হাজার ফিলিস্তিনের প্রাণ গেছে।
এমটিআই