ঢাকা : গাজা ইস্যুতে এবারে জাতিসংঘ ইতিহাসে প্রথমবারের মত নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে।
সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারা জারির আহ্বান করে এমন ইতিহাস তৈরি করলেন। আর এই ধারাকে যে কোনো বৈশ্বিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘ মহাসচিবের সবচেয়ে শক্তিশালী কূটনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান প্রধান জ্যাভিয়ার লোপেজ ডোমিঙ্গুয়েজের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে জাতিসংঘ সনদের ৯৯ অনুচ্ছেদ জারির আহ্বান জানান গুতেরেস। ধারাটিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এমন বিষয়ে যে-কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গাজায় একটি মানবিক বিপর্যয় এড়াতে নিরাপত্তা পরিষদকে চাপ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস। একই সঙ্গে গাজায় অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো ৯৯ ধারা প্রয়োগের আহ্বান জানালেন গুতেরেস।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইসরায়েল যখন গাজা উপত্যকার ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ মহাসচিবের এই পদক্ষেপ মার্কিন সরকারের কাছে ‘চরম বিব্রতকর’ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গুতেরেস এই প্রথম ইসরাইলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিষয়টি কিন্তু তা নয়। এর আগেও গত ২৩ অক্টোবর তিনি এক বক্তব্যে বলেছিলেন, হামাস শুধু শুধু ৭ অক্টোবরের অভিযান চালায়নি।
সেই দিন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের উদ্দেশে গুতেরেস বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়ে আসছে। তারা দেখেছেন, তাদের ভূমি প্রতিনিয়ত বসতি দ্বারা দখল ও সহিংসতায় জর্জরিত হচ্ছে, তাদের অর্থনীতি স্তিমিত, তাদের মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং তাদের বাড়িঘর বিধ্বস্ত। তাদের এমন দুর্দশায় রাজনৈতিক সমাধানের আশা লোপ পাওয়ার পরই তারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়েছে।’
এদিকে গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারা জারি করার আহ্বানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত গিলাড এরডান বুধবার রাতে এক্স পোস্টে কড়া মন্তব্য করেন।তিনি লিখেন, ইসরায়েল গুতেরেসের এ আহ্বানকে ‘চরম নৈতিক অবক্ষয়’ বলে মন্তব্য করেছে। এ সময় জাতিসংঘ মহাসচিবের পদ থেকে গুতেরেসকে পদত্যাগেরও আহ্বান জানিয়েছে তেল আবিব। সূত্র: আল-জাজিরা/ইউএন নিউজ
এমটিআই