ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার গাজার পশ্চিমতীরের চরমপন্থি ও দাঙ্গার উসকানিদাতা ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞার জারির কথা ভাবছে কানাডা।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) কানাডার অন্টারিও প্রদেশের ওয়াটারলু শহরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাস্টিন ট্রুডো এসব কথা বলেন।
মূলত এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে উত্তর আমেরিকার দেশটি।
এ সময় আমেরিকা পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন দিয়ে ট্রুডো বলেন, দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এখন সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। আমরা এমন কোনো তৎপরতা সেখানে চলতে দিতে পারি না, যা পশ্চিমতীরের শান্তি-স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বাধা সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, কানাডা পশ্চিমতীর অঞ্চলে সহিংসতার অবসান চায়। এ জন্য এ পদক্ষেপটি আমাদের বিবেচনাধীন।
জর্ডান নদীর পশ্চিমাংশের পাঁচ হাজার ৬৫৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ডটি ‘পশ্চিমতীর’ নামে পরিচিত। নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে গত ৭৫ বছর ধরে ফিলিস্তিনের জনগণ যে আন্দোলন সংগ্রাম করছেন, সেই রাষ্ট্রের রূপরেখার মূল অংশে রয়েছে এই ভূখণ্ড।
মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে ১৯৬৭ সালে পশ্চিমতীর দখল করে ইসরাইল এবং সেখানকার বিভিন্ন শহর-গ্রামে ইহুদি বসতিস্থাপনকারীদের পাঠানো শুরু করে। বিশ্বের প্রায় সব রাষ্ট্র ইসরাইলের এ পদক্ষেপকে অবৈধ বলে আখ্যা দিয়ে আসছে। তবে ইসরাইলের বক্তব্য— এ অঞ্চলের সঙ্গে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় সংযোগ রয়েছে।
পশ্চিমতীরের শহর-গ্রামগুলোতে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরাইলি বসতকারীদের বিবাদ-অস্থিরতা প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। তবে গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভূখণ্ডে হামাসের হামলার ১৮ মাস আগে থেকে পশ্চিমতীরে ফিলিস্তিনি ও ইহুদি বসতকারীদের মধ্যে অস্থিরতার মাত্রা বাড়ছিল। হামাসের হামলার পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ৭ অক্টোবরের পর গত প্রায় চার মাসে পশ্চিমতীরে ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি দাঙ্গায় নিহত হয়েছে প্রায় ৩৭০ ফিলিস্তিনি। ইসরাইলের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং বসতি স্থাপনকারীরা এসব হত্যার জন্য দায়ী।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার পশ্চিমতীরের চার বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার আদেশে স্বাক্ষরের আগে মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের উদ্দেশে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই চিঠিতে বাইডেন বলেন, পশ্চিমতীরে দাঙ্গা পরিস্থিতি চলছে। গোঁড়া ও চরমপন্থিদের লাগামহীন সহিংসতা, বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড ও লুটপাটের কারণে ইতোমধ্যে শত শত বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, বিপুলসংখ্যক মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, সরকারি-বেসকরকারি-ব্যক্তিগত সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই অসহনীয় অবস্থা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নিষেধাজ্ঞা আদেশে স্বাক্ষর করার কয়েক ঘণ্টা পর ওয়াটারলুতে সংবাদ সম্মেলন করেন ট্রুডো। সেখানে পরোক্ষভাবে বাইডেনকে সমর্থন করেন তিনি। সূত্র: রয়টার্স
এমটিআই