ঢাকা : ইসরায়েল যদি ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক হামলার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তবে যুক্তরাষ্ট্র তাতে অংশ নেবে না বলে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জানিয়েছেন হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশই ইরান থেকে ছোড়া হলেও ইরাক, সিরিয়া ও লেবানন থেকেও কিছু ছোড়া হয়।
ইসরায়েলের দাবি, তারা ও তাদের মিত্ররা এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশ আকাশপথেই ধ্বংস করে দিয়েছে। ইরানি হামলায় শুধু তাদের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি বিমান ঘাঁটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৭ বছর বয়সী এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। তবে হামলায় ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও বিমান ঘাঁটিটির কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, ইসরায়েলমুখি ইরানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে ইসরায়েলকে সহায়তা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও জর্ডান।
১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৩ জন নিহত হয়। দূতাবাসে এ হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে ইরান এর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছিল। শনিবার রাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ওই হামলাটি চালায় তারা।
এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তিশালী শত্রু রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সে রকম কিছু হলে এতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। আর তাতে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রাণঘাতী একটি যুদ্ধের মধ্যে থাকা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
এ পরিস্থিতিতে রাশিয়া, চীন ও ফ্রান্সের মতো বিশ্ব শক্তি, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশ এবং জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে মার্কিন গণমাধ্যম জানায়, ইরানের হামলার পর রাতেই এক ফোন কলে বাইডেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিনি প্রতিশোধমূলক হামলায় অংশ নেবেন না। হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তাও রয়টার্সকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর পাশপাশি রোববার মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি-র ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়ক জন কারবি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা বজায় রাখবে, কিন্তু যুদ্ধ চায় না।
রোববার দুইজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি মন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ আসন্ন নয় আর তারা এককভাবে এ ধরনের কিছু করতে যাচ্ছে না। আঞ্চলিক একট জোট গঠনের মাধ্যমে ইরানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত সময়ে জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এমটিআই