• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রেমিকাকে খুনের পর রক্তমাখা হাতে মাকে জড়িয়ে ধরে পুলিশকে ফোন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মে ১১, ২০২৪, ০৫:৩৬ পিএম
প্রেমিকাকে খুনের পর রক্তমাখা হাতে মাকে জড়িয়ে ধরে পুলিশকে ফোন

ঢাকা: মায়ের দাবি, শনিবার (১১ মে) ঘুম থেকে ওঠার পর ছেলের আচরণে কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল না। এমনকি, দুপুরে খাবার খেয়েছেন পরিপাটি করে। খেয়ে উঠে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মিঠু শেখ। কিন্তু ঘণ্টাখানেক বাদে হন্তদন্ত হয়ে মিঠু যে ভাবে ছুটে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন, সে ছেলেকে চিনতেই পারছিলেন না মজিদা বিবি। 

তিনি বলেন, ‘‘রক্তমাখা ছিল ওর হাত। আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘আমি ওকে শেষ করেছি।’’ কী হয়েছে, কী কাণ্ড ঘটিয়ে এসেছেন পুত্র, তা তখনও ঠাওর করতে পারেননি মজিদা। তবে ছেলের কান্না দেখে তিনিও কাঁদতে থাকেন। একটু পরে তাঁর কাছে স্পষ্ট হল ব্যাপারটা, যখন ছেলে নিজেই পুলিশকে ফোন করলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের হাজারিপাড়ায় মিঠুর বাড়িতে আসে পুলিশ। এক সহপাঠিনীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ১৮ বছরের ওই তরুণকে।

শনিবার দুপুরে দৌলতাবাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খুন হয় সাবিনা খাতুন নামে এক নাবালিকা। পুলিশ সূত্রে খবর, তাকে ফোন করে স্কুলের সামনে ডেকেছিলেন মিঠু। অল্প কিছু ক্ষণের কথাবার্তা, তার পরেই কথা কাটাকাটি এবং খুন। অভিযোগ, পকেট থেকে ছুরি বার করে ‘দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা’ সাবিনাকে একের পর এক ছুরির কোপ দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান মিঠু। ছুরির আঘাতে গলার নলি কেটে যায় ওই নাবালিকার। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ তার দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, মৃত্যু হয়েছে নাবালিকার। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই গ্রেফতার হন অভিযুক্ত।

পরিবারের দাবি, খুনের পর বাড়ি থেকে নিজেই পুলিশকে ফোন করেছিলেন মিঠু। বাড়ি থেকেই তাঁকে নিয়ে যায় পুলিশ। পরিবার সূত্রে খবর, সাবিনার সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক ছিল মিঠুর। কিন্তু কিছু দিন ধরে দু’জনের মধ্যে অশান্তি চলছিল। মিঠু সন্দেহ করেছিলেন, প্রেমিকার জীবনে অন্য কোনও পুরুষ এসেছেন। অন্য দিকে, সাবিনা চেয়েছিল মিঠুর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করতে। এ নিয়ে দু’জনের কথা কাটাকাটি হয়। তার পরেই খুনের ঘটনা।

অভিযুক্তের মায়ের সাফাই, ওই নাবালিকার সঙ্গে একাধিক ‘ছেলে’র সম্পর্ক ছিল। তাঁর ছেলে বার বার নাকি নিষেধ করেন। কিন্তু মেয়েটি শোনেনি। তার জন্য খুন? মজিদার জবাব, ‘‘আমি ছেলেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলাম ওই সম্পর্ক থেকে। কিন্তু ওই মেয়েই ওকে ছাড়েনি। এখন ওকে লুকিয়ে অন্য জনের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক তৈরি করেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ও তো মরলই। আমার পরিবারটাকেও শেষ করে গেল।’’

সাবিনা এ বছরই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বলে তার পরিবার সূত্রে খবর। ১৭ বছর বয়সি সাবিনা ভর্তি হয়েছিল লালবাগ কলেজে। মৃতার দাদা সেলিম রেজার অভিযোগ, তাঁর বোনকে খুনের পরিকল্পনা করেই ডেকে নিয়ে গিয়েছিল মিঠু। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে পরিকল্পনা করে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার বোনকে মিঠু খুন করেছে, তাতে ওর কঠিনতম শাস্তি হোক। রাজনৈতিক কিংবা আর্থিক প্রভাবে ও কোনও ভাবেই যেন ছাড় না পায়।’’

সূত্র-আনন্দবাজার

আইএ

Wordbridge School
Link copied!