ঢাকা : নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নার্গিস মোহাম্মদীকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ইরানের একটি আদালত। ‘রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের’ অভিযোগ এনে এই দণ্ড দেওয়া হয়। খবর এএফপির।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) দেশটির কারাবন্দি এই নোবেলজয়ীকে দেওয়া আদালতের সাজার বিষয়ে জানিয়েছেন তার একজন আইনজীবী।
ইরানে নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিধান ও মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য পরিচিত নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী নার্গিস মোহাম্মদী।
এই ধরনের আন্দোলন ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কয়েকটি অভিযোগে অতীতেও তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এসব মামলায় দোষী সাব্যস্ত ৫২ বছর মোহাম্মদীকে ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
নার্গিস মোহাম্মদীর আইনজীবী মোস্তফা নিলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে বলেছেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে মোহাম্মদীকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
নিলি বলেন, সংসদীয় নির্বাচন বর্জনের আহ্বান, সুইডিশ ও নরওয়েজিয়ান আইনপ্রণেতাদের চিঠি এবং সাংবাদিক দিনা গালিবাফ সম্পর্কে মন্তব্য করায় নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদীকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থী গালিবাফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে তাকে একটি মেট্রো স্টেশনে গ্রেফতারের সময় হাতকড়া পরানোর ও যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ তুলেছিলেন। পরে তাকে হেফাজতে নিয়েছিল আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। যদিও পরবর্তীতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ২২ এপ্রিল ইরানের বিচার বিভাগের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম মিজান অনলাইন এক প্রতিবেদেনে জানায়, গালিবাফ ধর্ষিত হননি। ‘মিথ্যা বিবৃতি’ দেওয়ার ঘটনায় তার বিচার চলছে।
নোবেলজয়ী নার্গিস মোহাম্মদী চলতি মাসের শুরুর দিকে তেহরানে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিচারের শুনানিতে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানান। গত মার্চে কারাগার থেকে দেওয়া এক অডিও বার্তায় তিনি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ‘নারীদের বিরুদ্ধে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ’ চলছে বলে এর নিন্দা জানিয়েছিলেন।
গত কয়েক মাসে ইরানের পুলিশ নারীদের জন্য দেশটির ইসলামিক পোষাক বিধি প্রয়োগ জোরদার করেছে। বিশেষ করে দেশটিতে নারীদের ওপর ভিডিও নজরদারি চালানো হচ্ছে। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পরপরই দেশটিতে নতুন আইন তৈরি করা হয়। ওই আইনে ইরানে জনসম্মুখে নারীদের চুল ঢেকে রাখা ও শালীন পোষাক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়।
এমটিআই