ঢাকা: বাংলাদেশের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি ও অবনতিশীল মানবাধিকার অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে চিঠি লিখেছেন মার্কিন কংগ্রেসের ১৯জন সিনেটর ও প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য।
এই চিঠির উদ্যোক্তা সিনেটর এডওয়ার্ড জে. মারকি (ডেমোক্রেট- ম্যাচাচুসেটস), প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য জিম ম্যাকগভার্ন ও বিল কেটিং। তারা ক্ষমতাসীন দলের এবং বিরোধী রিপাবলিকান উভয় দলের সদস্য।
সিনেটর এডওয়ার্ড জে মারকির নিজস্ব ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) লিখিত চিঠিতে তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আরও অবনতি রোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। চিঠিতে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও আনা হয়েছে।
চিঠিতে তারা বলেছেন, কয়েক সপ্তাহে সারা বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষে লিপ্ত নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। এতে বর্তমান সরকারের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি প্রকাশিত হয়ে পড়েছে।
চিঠিতে তারা লিখেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খর্ব করে এমন পদক্ষেপ অব্যাহতভাবে নিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অতি সম্প্রতি গুলি, কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রায় পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ভয়াবহভাবে দমনপীড়ন চালাচ্ছে।
এছাড়া চিঠিতে জানুয়ারিতে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের উল্লেখ করে জোর দিয়ে বলা হয়, এসব উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের যে জোরালো সম্পর্ক আছে তার প্রেক্ষিতে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে সমুন্নত করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উদ্যোগ নেবেন আপনি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই সব সহিংসতার নিন্দা করতে হবে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মতো সমালোচনামূলক নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং বাংলাদেশি জনগণের বিরুদ্ধে উপরিউক্ত অপব্যবহারের জন্য জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্রের আরও অবনতি রোধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অংশীদার হয়ে বাংলাদেশি জনগণের একটি প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকারের অধিকারকে সমর্থন করতে হবে। সেই সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখবে ও ব্যক্তিস্বাধীনতাকে সম্মান করবে।’
চিঠিতে স্বাক্ষর করা অন্যান্য আইনপ্রণেতারা হলেন—সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, সিনেটর ডিক ডারবিন, সিনেটর টিম কেইন, সিনেটর টামি বল্ডউইন, সিনেটর জেফ মার্কলে ও সিনেটর ক্রিস মারফি।
এ ছাড়া মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের যেসব সদস্য স্বাক্ষর করেছেন তারা হলেন—সেথ মল্টন, লরি ট্রাহান, জো উইলসন, দিনা টাইটাস, গ্রেস মেং, গেরি কনলি, গাবে আমো, আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, ইলহান ওমর, নাইডিয়া ভেলাজকুয়েজ, ড্যান কিলডি, বারবারা লি ও জেমস ময়লান।
এসআই