ঢাকা : বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগের কারণ আছে কিনা এমন প্রশ্নে কংগ্রেস নেতা ও সংসদ সদস্য শশী থারুর বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পরস্পরবিরোধী প্রতিবেদন আসছে। এ ধরনের দুয়েকটা ঘটনা যে ঘটছে না, তা নয়। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও দেখতে হবে, দাঙ্গার মধ্যেই বাংলাদেশের মুসলিমরা হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দির রক্ষা করছেন। এটা ভালো খবর।’ আর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে আশার আলো দেখছেন বলেও জানিয়েছেন প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা।
সোমবার (১২ আগস্ট) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারে প্রশংসা করে কংগ্রেস এ নেতা বলেন, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তন ভারতের জন্য উদ্বেগের কারণ নয়। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে জামায়াতে ইসলামি বা পাকিস্তানি আইএসআই-এর ঘনিষ্ঠ ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে তিনি কিছুটা ওয়াশিংটনপন্থী।
বাংলাদেশে সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের মূল লক্ষ্য জনগণের মঙ্গল জানিয়ে কংগ্রেস এ নেতা বলেন, ‘ আমাদের মৌলিক স্বার্থ বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে নিহিত। আমাদের মৌলিক প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের জনগণের মঙ্গল। অর্থাৎ প্রথমে জনগণ, এরপর রাষ্ট্র এবং তৃতীয় ধাপে রয়েছে কোনো নেতার কথা।
বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ১৯৭১ সাল থেকেই ভারত রয়েছে জানিয়ে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর আরও বলেন, ‘নানা উত্থান-পতনের মধ্যেও আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। এমনকি যখন সেখানে ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব ছিল না-এমন সরকারের সঙ্গেও সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছি আমরা। অবশ্যই ভবিষ্যতেও সেই সম্পর্কের কোনো অবনতি হওয়া উচিত নয়।’
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কিছু নেই বলে মনে করেন শশী থারুর। তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাপী একজন সম্মানিত ব্যক্তি। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তাকে জামায়াত বা আইএসআই-এর ঘনিষ্ঠ ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে বাংলাদেশের এ সহিংস বিক্ষোভের কিছু ঘটনায় আইএসআইয়ের হাত থাকতে পারে। চীনও এই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে এমন পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। তবে ড. ইউনূস সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার আহ্বান জানিয়েছেন।’
শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘আমরা যদি শেখ হাসিনাকে সাহায্য না করতাম তাহলে এটা ভারতের জন্য কলঙ্কজনক হতো। তিনি কতক্ষণ ভারতে থাকতে চান তা নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন না হওয়াই ভালো। আপনি অতিথিকে ডেকে এনে তিনি কখন বাড়ি ফিরবেন, তা জিজ্ঞেস করতে পারেন না।’
এমটিআই