ঢাকা : আফ্রিকার কয়েকটি অংশে এমপক্সের প্রাদুর্ভাবকে বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করার মতো জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ।
ভাইরাসজনিত এ সংক্রমণ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) পর প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ছড়িয়েছে। আগে মাংকিপক্স হিসেবে পরিচিত অত্যন্ত সংক্রামক এই রোগের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাব চলাকালে ডিআরসিতে অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়।
এই রোগটি এখন মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায় বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। এই রোগের নতুন একটি ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় ও এর উচ্চ মৃত্যু হারের কারণে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বুধবার একটি জরুরি কমিটি ডব্লিউএইচও-র মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়াসুসের দেখা করে রোগটির প্রাদুর্ভাব ‘আন্তর্জাতিক উদ্বেগ তৈরি করার মতো জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা’ বা পিএইচইআইসি তৈরি করেছে কিনা তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দুই বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এমপক্সকে বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করে।
পিএইচইআইসি অবস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা। এই সতর্কতা জারি করা হয় কোনো একটি রোগকে নিয়ন্ত্রণের জন্য গবেষণা, তহবিল ও বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য পদক্ষেপে গতি আনার জন্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গেব্রিয়াসুস বলেছেন, আফ্রিকার ভেতরে ও বাইরে রোগটির ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ‘খুব উদ্বেগজনক’।
এই প্রাদুর্ভাব থামানো ও জীবন রক্ষার জন্য একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
বিবিসি জানিয়েছে, এমপক্স ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ যেমন, যৌন সম্পর্ক, গায়ে গা লাগা ও অন্য জনের খুব কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিঃশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে ছড়ায়।
এই রোগের সংক্রমণে জ্বরের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয় আর এটি প্রাণঘাতী হতে পারে; এই রোগে আক্রান্ত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়।
এমপক্সের দু’টি ধরন আছে, ক্লেইড ১ ও ক্লেইড ২।
এর আগে ২০২২ সালে ক্লেইড ২ এর তুলনামূলক মৃদু সংক্রমণ চলাকালে জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু এবার অনেক প্রাণঘাতী ক্লেইড ১ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে ক্লেইড ১ ভাইরাসটিতেও একটি পরিবর্তন ঘটেছে। মিউটেশনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হওয়া ভাইরাসগুলোকে ক্লেইড ১বি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে আর এটি দ্রুত ছড়াচ্ছে। একজন বিজ্ঞানী এমপক্সের এই ধরনটিকে ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
চলতি বছরের শুরু থেকে ডিআর কঙ্গোতে ১৩ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি এমপক্স রোগী শনাক্ত হয়েছেন আর তাদের মধ্যে অন্তত ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তারপর থেকে ডিআর কঙ্গোর প্রতিবেশী দেশ বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, কেনিয়া ও রুয়ান্ডাতেও রোগটি ছড়িয়েছে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :