ঢাকা : চলতি বছর এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালি ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির আঘাতে লণ্ডভণ্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনাম। দিন দিন বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। সুপার টাইফুন ইয়াগির আঘাতে প্রবল বর্ষণ-বন্যা ও ভূমিধসে ভিয়েতনামে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৪ জনে।
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে শংকা করছে কর্তৃপক্ষ। খবর রয়টার্স।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্যমতে, এ ঝড়ে ৮২০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে এবং ৮২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। বন্যার পানি কমে যাওয়ায় নিখোঁজদের অনুসন্ধানের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷
দেশটির প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার ভোরে উত্তরাঞ্চলীয় পার্বত্য প্রদেশ লাও কাইয়ের নু গ্রামের ৩৭টি বাড়ি ভেসে যাওয়ার পর থেকে এখনও নিখোঁজ থাকা ৪১ জনের সন্ধান করছে কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় গ্রামের ৪৬ জন বাসিন্দা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে শহরাঞ্চলের লোকজন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়, খাদ্য ও ওষুধ পেলেও গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। ভূমিধস ও বন্যার কারণে দেশটির প্রত্যন্ত গ্রাম লাও কাইয়ের বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁশ ও তারপুলিন খাটিয়ে বাস করতে থাকা এই লোকজনদের ব্যাপক খাদ্য সংকটে ভুগছেন।
লাও কাই গ্রামের গ্রামপ্রধান ভ্যাং সিও চু রয়টার্সকে বলেন, “বাড়িঘর ছেড়ে আসার সময় আমরা সঙ্গে করে শুধু চাল আর কিছু খাবার আনতে পেরেছিলাম। তিন দিন আগে আমাদের খাবার শেষ হয়ে গেছে, সেই থেকে জঙ্গলের বাঁশ কোড়ল খেয়ে টিকে আছি।”
তবে লাও কাইয়ের অন্য আরেকটি গ্রামে, নিখোঁজ থাকা ১১৫ জন মানুষ দুই দিন পাহাড়ে আশ্রয় নেওয়ার পর নিরাপদে ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দেশটির লাখ লাখ শিশু তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ঝড়ে স্কুলগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় প্রায় ২০ লাখ শিশু শিক্ষা, সামাজিক সহায়তা এবং শিক্ষা খাদ্য কর্মসূচী থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
ইউনিসেফের অনুমান, ক্ষতিগ্রস্থ শিশু এবং পরিবারের চাহিদা মেটাতে প্রাথমিকভাবে দেড় কোটি ডলার প্রয়োজন।
তবে বন্যার পানি কমে যাওয়ায় কিছু কিছু সড়কে যানবাহন চলাচল করতে অনুমতি দিয়েছে ভিয়েতনাম সরকার।
এমটিআই