• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

হ্যারিসের পরাজয়ের পর ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাটরা দুষছেন বাইডেনকে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক নভেম্বর ৭, ২০২৪, ০২:০১ পিএম
হ্যারিসের পরাজয়ের পর ক্ষুব্ধ ডেমোক্র্যাটরা দুষছেন বাইডেনকে

ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের পরাজয়ে ডেমোক্রেটিক পার্টির কিছু কর্মকর্তা ও ভোটার হতবাক হয়ে পড়েছেন, পুরো দলজুড়ে ক্ষোভ ও আত্মসমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে।

মাত্র তিন মাসের কিছু বেশি সময় আগে নির্বাচনি দৌঁড়ে নামা হ্যারিসের তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জয়ের সুযোগ কমই ছিল। কিন্তু হ্যারিসের পরাজয়ের ধরনে কিছু ডেমোক্র্যাট দলের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

সবচেয়ে তীব্র যে সমালোচনা সামনে এসেছে তা হল, দলটি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে সমর্থকদের মিথ্যা বলেছে, জুনে ট্রাম্পের সঙ্গে বিপর্যয়কর টেলিভিশন বিতর্কের সময় যা প্রকাশ পায়। এতে সতর্ক ঘণ্টা বেজে ওঠে আর প্রেসিডেন্টকে তড়িঘড়ি করে নির্বাচনি দৌঁড় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

একজন ডেমোক্র্যাট দাতার প্রশ্ন: কেন বাইডেন যতক্ষণ সম্ভব ততক্ষণ প্রার্থী হিসেবে থেকে গেলেন? তার নিজের (স্বাস্থ্যের) অবস্থা গোপন করা উচিত হয়নি আর আরও আগেই তার সরে দাঁড়ানো উচিত ছিল।

৮১ বছর বয়সী বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছেন, তিনি ভেবেছিলেন তিনিই একমাত্র ডেমোক্র্যাট যে ট্রাম্পকে হারাতে পারবে। আর প্রকাশ্যে তিনি বলেছেন, আরও চার বছর প্রেসিডেন্ট থাকার মতো সক্ষম আছেন তিনি। জুলাইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সময় তিনি জানান, ‘দল ও দেশের বৃহত্তর স্বার্থেই সরে দাঁড়ানোর’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

২০২৩ এর এপ্রিলে বাইডেন যখন ঘোষণা করলেন যে তিনি পুনর্নির্বাচনের জন্য দাঁড়াবেন তখন অনেক ডেমোক্র্যাট সংশয়ের সঙ্গে অভিবাদন জানিয়েছেন, কিন্তু দলের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা তার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না নেমে দ্রুত উপদেষ্টা হিসেবে তার প্রচার শিবিরে যোগ দিতে সম্মত হয়ে যান।

ডেমোক্র্যাট এক কর্মকর্তা বাইডেনের ঘনিষ্ঠ চক্রের ‘অসৎ আচরণ’ কে দোষারোপ করেছেন। হোয়াইট হাউজের যোগাযোগ ও রাজনৈতিক টিমের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কেউ তাকে ‘মানা’ করল না। তাই এটি জো এবং জোর মূল ঘনিষ্ঠরা। যেন কোনো মুরগি সেজেগুঁজে রোস্ট হওয়ার জন্য বাড়িতে আসছে।”

হ্যারিসের এক সহযোগী জানিয়েছেন, ভাইস প্রেসিডেন্টের প্রচার শিবির শুরু থেকেই অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্টের প্রতি তার (হ্যারিসের) আনুগত্যের কারণে বিপর্যয়ের শিকার হয়েছিল। প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করা কেউ নির্বাচনে দাঁড়ালে ডেমোক্র্যাটরা হয়তো জিততো, তিনি ভিন্ন নীতি প্রস্তাব করে নিজেকে পরিবর্তনের প্রার্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে পারতেন।

ওই সহযোগী বলেন, আরেকটা গুরুতর ভুল হয়েছিল যখন প্রথমদিকে হ্যারিস এবিসির অনুষ্ঠানে ‘এই মনোভাব তুলে ধরেছিলেন’ যে বাইডেনের চেয়ে আলাদাভাবে তাকে কোনো কিছু করতে হবে এমনটি ভাবেননি তিনি।

রয়টার্স জানিয়েছে, পশ্চিমা অনেক দেশেরই ক্ষমতাসীন উদারপন্থি দলগুলো অভিবাসন নিয়ে রক্ষণশীল দলগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। যেমন, কানাডার উদারপন্থি প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ডানপন্থিদের সমালোচনার মুখে অভিবাসনের স্তর হ্রাস করতে বাধ্য হয়েছেন আর ইউরোপের কট্টর ডানপন্থি দলগুলো কঠোর অভিবাসন আইনের প্রত্যয় জানিয়ে মধ্য-বামদের ভোট নিজেদের দিকে টেনে নিচ্ছে।

তবে এসব বাস্তবতা সত্ত্বেও হ্যারিসের পরাজয়ের পর দাতা ও ভোটাররা ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কাছে হিসাব চাওয়া বন্ধ করেননি।

লম্বা সময় ধরে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে সমর্থক করে আসা কিন্তু এবার ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানানো হেজ ফান্ড ব্যবস্থাপক বিল অ্যাকম্যান সামাজিক মাধ্যম এক্স এ এক পোস্টে বলেছেন, “দলটির পুরোপুরি নতুন করে শুরু করা দরকার।”

তিনি বলেন, “দলটি প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্য ও সক্ষমতার বিষয়টি জানার পরও আমেরিকার জনগণের কাছে মিথ্যা বলেছে আর (প্রার্থী হিসেবে) তাকে সরানোর সময় কোনো প্রাইমারিরও আয়োজন করেনি।”

এসব বিষয়ে হ্যারিসের প্রচার শিবির এবং হোয়াইট হাউজ কোনো মন্তব্য করেনি।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!