ঢাকা : ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি মসজিদে সমীক্ষাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজনে। সংঘর্ষের ঘটনায় সাম্ভাল এলাকায় স্কুল-কলেজসহ ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার সকালে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী উত্তরপ্রদেশের সাম্ভালে মুঘল আমলে নির্মিত শাহী জামা মসজিদ সার্ভে বা সমীক্ষা করতে আসলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। মসজিদটি হিন্দু মন্দিরের স্থানে নির্মিত হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা নিয়ে আইনি লড়াই চলছে।
এনডিটিভি জানায়, আন্দোলনকারীরা একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে ও লাঠিপেটা করে।
রোববার দফায় দফায় তীব্র সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত চার জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া পুলিশের ২০ জন সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় তিন নারীসহ ২১ জনকে আটক করা হয়েছে এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচারে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সহিংসতার জন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে কঠোর মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
এনডিটিভি বলেছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় সাম্ভালে ২৪ ঘণ্টার জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত ও সোমবার এক দিনের জন্য দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সাম্ভালের উত্তপ্ত এলাকাগুলোতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া কোনও বহিরাগত, সামাজিক সংস্থা বা জনপ্রতিনিধিকে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
মসজিদ সার্ভে করতে আসলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়মসজিদ সার্ভে করতে আসলে স্থানীয়দের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়
ঘটনার পর গোটা এলাকায় তীব্র সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। শহরের যে মসজিদটিকে ঘিরে এই বিরোধ দেখা দিয়েছে সেটি ‘শাহী জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত। হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলির দাবি, প্রাচীন একটি হিন্দু মন্দির ভেঙেই এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল, ওই ভবনের স্থাপত্যে নাকি এখনও তার প্রমাণ রয়েছে।
যদিও এই মসজিদকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও মুসিলম গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আদালতে আইনি লড়াইও চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সম্প্রতি আদালত ওই মসজিদ প্রাঙ্গণে আগে কোনও হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ব ছিল কি না তা সার্ভে করানোর নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :