ঢাকা: ভারতেও ঢুকে পড়েছে এইচএমপিভি। চীনে ছড়িয়ে পড়া নতুন এই ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে দেশটিতে। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বেঙ্গালুরুতে একই দিনে দুই শিশুর শরীরে পাওয়া গেছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)-এর সংক্রমণ।
অবশ্য এটি ভাইরাসের চীনা রূপই কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়। এছাড়া ওই দুই শিশুর কারও অন্য কোথাও ভ্রমণের ইতিহাসও নেই। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সোমবার সকালে বেঙ্গালুরুতে প্রথমে আট মাস বয়সী এক শিশুর শরীরে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) ভাইরাসের হদিস মেলে। পরে তিন মাসের এক শিশুর শরীরেও একই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
তবে চীনে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণের কোনও সংযোগ নেই বলে দাবি করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিকে তিন মাস বয়সী শিশুকে ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর আট মাস বয়সী শিশুকে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। সম্প্রতি চীনে এই ভাইরাসের একটি রূপের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাতে উদ্বেগ দানা বেঁধেছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও।
অন্যদিকে পর পর দু’টি সংক্রমণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও সোমবার দুপুরে একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এই বৈঠকে কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, সেদিকে নজর থাকবে। তবে রাজ্যবাসীকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যসচিব হর্ষ গুপ্তা।
স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, এই দুই শিশুর কাউকেই সম্প্রতি অন্যত্র ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয়নি বা তাদের ট্রাভেল হিস্ট্রি নেই। ফলে অন্য কোনও দেশ বা অঞ্চলে গিয়ে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
স্বাস্থ্যসচিব গুপ্তা জানান, এই ভাইরাস নিয়ে চিন্তা করার কোনও প্রয়োজন নেই। এইচএমপিভি ভারতেও রয়েছে। তবে এই ভাইরাসটির কোনও রূপান্তর হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। চীনে ভাইরাসটির যে রূপ ছড়িয়ে পড়েছে, সেটির গঠনের বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য নেই।
ফলে এটি ভাইরাসের চীনা রূপ নাকি স্বাভাবিক এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। সাধারণ এইচএমপি ভাইরাসের ভারতে অতীতেও দেখা গেছে বলেও জানান তিনি।
অবশ্য এইচএমপিভি ভাইরাস নিয়ে বিশ্বের অন্য দেশগুলোকে উদ্বিগ্ন না-হওয়ার জন্য বলেছে চীনও। তাদের বক্তব্য, এটি মৌসুমী সংক্রমণ। শুধুমাত্র ‘শীতকালীন সংক্রমণ’ বলেই এই পরিস্থিতিকে ব্যাখ্যা করছে চীন। ভারতেও দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীকে অযথা উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, গত ১৬ থেকে ২২ ডিসেম্বর দেশটিতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এইচএমপিভি-এর সংক্রমণ। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুস্থতার কারণে বেড়েছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হারও, যা কোভিড-১৯, রাইনোভাইরাস বা অ্যাডিনোভাইরাসের চেয়েও বেশি।
সাধারণত ১৪ বছর বা তার কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। সংক্রমণটি একদম নতুন না হলেও, এই ভাইরাসের বিষয়ে প্রাথমিক সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এআর