• ঢাকা
  • বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩০

ঢাকায় পালাবদলের ধাক্কায় মন্ত্রিত্ব গেল টিউলিপের


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ১৫, ২০২৫, ১১:৩৪ এএম
ঢাকায় পালাবদলের ধাক্কায় মন্ত্রিত্ব গেল টিউলিপের

ঢাকা : পাঁচ মাস আগে তীব্র জনরোষের মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে হয় দোর্দণ্ডপ্রতাপে টানা দেড় দশকের বেশি সময় ধরে দেশ শাসন করা শেখ হাসিনাকে; বাংলাদেশে আচমকা রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সেই ধাক্কা গিয়ে লেগেছে সুদূর যুক্তরাজ্যে তার ভাগ্নির রাজনৈতিক জীবনে।

এবার লন্ডনে ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়লেন তার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক; দুর্নীতির অভিযোগে নাম আসায় যাকে নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তোলপাড় চলছিল যুক্তরাজ্যে।

সমালোচনার মুখে ব্রিটেনের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে মঙ্গলবার ইস্তফা দেন ৪২ বছর বয়সী টিউলিপ। এর মধ্যে দিয়ে চারবারের এই লেবার এমপির রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও হুমকির মুখে পড়ল।

গত অগাস্টে ঢাকায় তার খালা, বাংলাদেশের টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। ছাত্র-জনতার তুমুল গণ আন্দোলনে ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসনের অভিযোগ নিয়ে শেখ হাসিনাকে ভারতে পালিয়ে যেতে হয়।

এরপর থেকে ঢাকায় শতাধিক মামলা হয়েছে শেখ হাসিনার নামে। কখনও হত্যা মামলায় তার নাম এসেছে; কখনো আবার মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।

ঢাকায় এসব তদন্তের মধ্যেই হঠাৎ টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। রাশিয়ার অর্থায়নে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৫ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির অভিযোগে শেখ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নাম আসে ব্রিটেনের আর্থিক সেবা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের।

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১৭ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বোন শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানায়। সেই থেকে যুক্তরাজ্যেও খবরের শিরোনামে আসতে থাকেন উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি টিউলিপ, যিনি যুক্তরাজ্যের লেবার সরকারের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত।

ঢাকার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও টিউলিপের ‘দুর্নীতি ও অনিয়মে’ জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়ে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ হতে থাকে। এমনকি তার বিনা টিকেটে ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে যাওয়ার খবরও আসতে থাকে সংবাদমাধ্যমে।

পরিস্থিতি জটিল করে তোলে লন্ডনের কয়েকটি বাড়ি, যেগুলো টিউলিপ এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপহার দেওয়া হয়েছে কিংবা বিনা পয়সায় থাকতে দেওয়া হয়েছে। আর সেগুলো তাদের দিয়েছেন ধনাঢ্য বাংলাদেশিরা, যাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার যোগ আছে।

এসব নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তুমুল সমালোচনা চলছিল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে; টিউলিপের ওপর বাড়ছিল পদত্যাগের চাপ।

বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি যেমন তাকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকে, একটি পত্রিকায় রীতিমত সম্পাদকীয় লিখে তাকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেয়। প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়া হয় তাকে বরখাস্ত করার। দুর্নীতিবিরোধী একটি জোটও তাতে কণ্ঠ মেলায়।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূসও তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, তদন্তে যদি প্রমাণ হয় যে টিউলিপ এসব ‘ডাকাতি'র সুবিধাভোগী, তাহলে সম্পত্তিগুলো ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।

টিউলিপকে ক্ষমা চাইতে ও পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি সানডে টাইমসকে বলেছেন, তিনি দুর্নীতি দমনবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন এবং নিজেকে এখন নির্দোষ দাবি করছেন।

এ নিয়ে তর্ক-বির্তক আর সমালোচনার মধ্যে স্টারমারের মন্ত্রিসভা থেকে তার পদত্যাগের খবর এল।

হঠাৎ পদত্যাগের খবর : বিবিসি লিখেছে, ইনডিপেনডেন্ট এথিকস অ্যাডভাইজর স্যার লাউরি ম্যাগনাস মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার প্রতিবেদন দেন। এরপর স্টারমার ও টিউলিপের মধ্যে টেলিফোনে আলাপ হয়। পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তটি ছিল টিউলিপের নিজের।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার পদত্যাগপত্র দেওয়ার খবর যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে চাউর হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে তা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোরও শিরোনাম হতে শুরু করে। ঢাকাতেও শুরু হয় নানামুখী আলোচনা।

মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো টিউলিপ এক্স হ্যান্ডেলে নিজেই তার পদত্যাগের কথা জানান। এতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো পদত্যাগপত্রের ছবিও পোস্ট করেন।

পরে এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেছেন, তদন্তে আর্থিক বিষয়ে তার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘনের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু তিনি মনে করছেন, মন্ত্রীর দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার মনোযোগ ব্যাহত হতে পারে।

এ কারণে আমি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

রয়টার্স লিখেছে, পদত্যাগের পর টিউলিপকে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার একটি চিঠিও লিখেছেন। ওই চিঠি প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

সেখানে তিনি লিখেছেন, আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার পাশাপাশি আমি এটাও স্পষ্ট করে বলতে চাই, স্বাধীন উপদেষ্টা হিসেবে স্যার লাউরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, তিনি মন্ত্রী হিসেবে আপনার বিরুদ্ধে নিয়ম লঙ্ঘন ও আর্থিক অনিয়মের কোনো অভিযোগের ঘটনা পাননি।

প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, টিউলিপের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে তার খারাপ লেগেছে। সিটি মিনিস্টারের দায়িত্বে টিউলিপ যে ‘একাগ্রতা’ দেখিয়েছেন, সেজন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সঙ্গে এও বলেছেন, টিউলিপের জন্য ভবিষ্যতের ‘দরজা খোলা’ রয়েছে।

আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে আমি এটাও স্পষ্ট করতে চাই যে, ইনডিপেনডেন্ট এথিকস অ্যাডভাইজর স্যার লাউরি ম্যাগনাস আমাকে নিশ্চিত করে বলেছেন, নিয়ম ভঙ্গের কিংবা আর্থিক অনিয়মের কোনো প্রমাণ আপনার বিরুদ্ধে তিনি পাননি।

তবে ব্রিটেনের বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি বাডেনক প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেছেন, ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ টিউলিপকে সরানোর বিষয়ে কিয়ার স্টারমার ছিলেন দ্বিধান্বিত, তাকে রক্ষার জন্য প্রক্রিয়াটি তিনি ‘বিলম্বিত’ করেছেন।

এক এক্স পোস্টে বাডেনক বলেন, অ্যান্টি করাপশন মিনিস্টারের দায়িত্বে যে তার (টিউলিপ সিদ্দিক) আর থাকা চলে না, সেটা গত সপ্তাহান্তেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

বিষয়টিতে ‘একজন দুর্বল প্রধানমন্ত্রীর দুর্বল নেতৃত্ব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা।

রয়টার্স লিখেছে, এ নিয়ে গত দুই মাসে দুজন মন্ত্রী হারালেন স্টারমার; যিনি গত জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই গ্রহণযোগ্যতা হারাতে শুরু করেন।

টিউলিপের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন এমা রেনল্ডস, যিনি আগে পেনশন মিনিস্টারের দায়িত্বে ছিলেন। গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে উইকহেম আসন থেকে এমপি হন তিনি।

বিবিসি লিখেছে, স্যার লাউরি ম্যাগনাস তার প্রতিবেদনে বলেছেন, লন্ডনের কিংস ক্রসে উপহারের যে ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপকে ঘিরে বিতর্ক, সেই ফ্ল্যাটের মালিকানা কীভাবে তার হল, সে বিষয়ে তিনি ‘নিশ্চিত ছিলেন না’। যদিও ফ্ল্যাটের মালিকানা হস্তান্তরের নিবন্ধন ফর্মে তিনি সই করেছেন।

তার ধারণা ছিল, আগের মালিকের কাছ থেকে কিনে তার বাবা-মা তাকে ওই ফ্ল্যাট তাকে দিয়েছেন।

আর ২০১৩ সালে মস্কোতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চুক্তির সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টিউলিপের ক্যামেরাবন্দি হওয়ার ঘটনায় যে বিতর্ক, সে বিষয়ে ম্যাগনাস বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে সেখানে (মস্কোতে) রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় আলোচনায় তার কোনো ভূমিকা ছিল না।

টিউলিপের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ : এর আগেও তার বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার অর্থ প্রকাশ না করা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল।

সে যাত্রায় রক্ষা পেলেও বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি আস্তে আস্তে তার বিপক্ষে চলে যেতে থাকে।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মত টিউলিপের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করার কথা জানানো হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘুষ আর অনিয়মের মাধ্যমে পাওয়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার তারা অবৈধভাবে অন্য দেশে পাচার করেছেন।

>> রূপপুর প্রকল্পে ৫ বিলিয়ন ডলার দুর্নীতির অভিযোগ দুদকের অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে যেটির শুরু। এতে শেখ হাসিনার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নাম আসে টিউলিপের।

>> রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৩ সালে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে মধ্যস্থতা করেছিলেন। বাজারদরের চেয়ে বেশি খরচের ওই চুক্তির মাধ্যমে তিনি অর্থ ‘আত্মসাৎ’ করেছেন।

>> টিউলিপ নিজে লন্ডনের ‘কিংস ক্রস’ এলাকায় একটি ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন আবদুল মোতালিফ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে, যার বর্তমান মূল্য ৭ লাখ পাউন্ড। মোতালিফের সঙ্গেও শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের যোগসূত্র থাকার খবর এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে।

>> লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় টিউলিপ একটি ফ্ল্যাট ব্যবহার করতেন, যেটা তার ছোট বোন আজমিনাকে ‘উপহার’ দিয়েছিলেন মঈন গণি নামের এক আইনজীবী বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সানডে টাইমস। এতে বলা হয়, আইনজীবী মঈন শেখ হাসিনা সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ছবিও আছে।

তবে টিউলিপের একজন মুখপাত্র বলেছেন, আওয়ামী লীগের প্রতি তার সমর্থনের সঙ্গে এসব সম্পত্তির যোগসূত্র থাকার ধারণা ‘একেবারেই ভুল'।

>> ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে’ ঢাকার পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দের তিনটি মামলাতেও দুদক আসামি করেছে টিউলিপকে। তার মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি এবং বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীর নামে এসব অভিযোগ আনা হয়। এগুলোতে আসামি শেখ হাসিনাও।

সরে দাঁড়ানোর আহ্বান : ব্রিটেনের সিটি মিনিস্টার হিসেবে আর্থিক খাতের দুর্নীতি বন্ধ করা টিউলিপের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। সেখানে টিউলিপের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠতে শুরু করে।

তবে প্রথম থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন ৪২ বছর বয়সী টিউলিপ। অভিযোগগুলো তদন্ত করতে তিনি এজন্য নিজেকে স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থার কাছে সমর্পণ করেন।

এরপর ঢাকা ও লন্ডনে আরও কিছু ’অনিয়ম’ ও ‘দুর্নীতির’ অভিযোগের তথ্য সামনে এলে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে সমালোচনার তীর তীব্র হতে থাকে। তার সরে দাঁড়ানোর দাবি জোরালো হওয়ার মধ্যে গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আবারও তার পক্ষ নিয়ে বলেন, টিউলিপের বিষয়ে তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

তবে কিছুদিন না যেতেই পরিস্থিতি পাল্টে গেল।

সবশেষ দুর্নীতিবিরোধী দায়িত্ব থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় যুক্তরাজ্যের দুর্নীতি বিরোধী জোটও।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট লিখেছে, অর্থনৈতিক অপরাধ, অর্থপাচার ও অবৈধ অর্থায়ন প্রতিরোধের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার জন্য টিউলিপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনগুলোর জোট বলেছে, মন্ত্রীর আচরণবিধি টিউলিপ লঙ্ঘন করেছেন কি না তা স্যার লাউরি খতিয়ে দেখছেন, কিন্তু মন্ত্রীর 'গুরুতর স্বার্থের দ্বন্দ্ব' রয়েছে।

এর আগে কনজারভেটিভ পার্টির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স বলেন, টিউলিপের ব্যক্তিগত লেনদেন সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর না মেলা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতিবিরোধী নীতিগত সিদ্ধান্তের দায়িত্ব থেকে অবশ্যই তাকে সরিয়ে রাখতে হবে কিয়ার স্টারমারকে।

হ্যারো ইস্টের টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেন, টিউলিপকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তাকে ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী বলা হয়েছে আর কেন বলা হয়েছে। যদি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে অক্ষম।

যুক্তরাজ্যে টিউলিপকে নিয়ে তদন্ত চলার মধ্যে তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস।

দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ওঠার পর তিনি আর দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারেন না বলেও রুপার্ট মারডকের মালিকানায় থাকা ব্রিটিশ সংবাদপত্রটির সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে। ৭ জানুয়ারি প্রকাশিত ওই সম্পাদকীয়তে তাকে এ দায়িত্বের জন্য বেছে নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সমালোচনাও করা হয়।

এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!