• ঢাকা
  • রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩০

ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ


আন্তর্জাতিক ডেস্ক মার্চ ২১, ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম
ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

ঢাকা: গাজা উপত্যকায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলের রাস্তায় নেমে হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক বিক্ষোভ করেছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেছেন তারা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহু সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে।

বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। জেরুজালেম ও তেল আবিব থেকে পুলিশ কমপক্ষে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আয়োজকেরা বলছেন, বিক্ষোভ কর্মসূচি যেভাবে গতি পাচ্ছে, তাতে আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার জন্য নেতানিয়াহুর প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তবে গাজায় প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে ওঠে।

যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি সরকারগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং গাজায় এখনো হামাসের কাছে জিম্মি থাকা ৫৯ জনের পরিণতি নিয়ে ভাবছে না। ধারণা করা হচ্ছে, জিম্মিদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন।

ব্রাদার্স ইন আর্মস আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী ইতান হার্জেল বলেন, ‘এই সরকার এখন নিজেকে রক্ষা করার জন্য, ইসরায়েলের জনসাধারণকে বিরক্ত করবে, এমন বিষয়গুলো থেকে নজর অন্যদিকে সরানোর জন্য আবারও যুদ্ধ শুরু করেছে। সরকার সম্ভাব্য সব পর্যায়ে সব ধরনের বৈধতা হারিয়েছে। তারা ব্যর্থ হচ্ছে।’

গত বুধবার হাজার হাজার মানুষ জেরুজালেমের মধ্যাঞ্চলে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের কাছের সড়কগুলোতে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাদের অনেকের হাতে ছিল পতাকা এবং গাজায় এখনো জিম্মি থাকা মানুষদের সমর্থনে লেখা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড। অনেকে ড্রাম বাজাচ্ছিলেন এবং স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘এখনই জিম্মি মুক্তির চুক্তি করুন।’

বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন ওরা নাকাশ পেলেড। তিনি নৌবাহিনীর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি হাইফা শহরের নিকটবর্তী একটি এলাকা থেকে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। জেরুজালেমের উপকণ্ঠে তাঁবুর ভেতর অন্য বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তিনি রাত কাটিয়েছেন। পরে পায়ে হেঁটে শহরটির ভেতর ঢুকে গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কে বিক্ষোভ করেন।

নাকাশ পেলেড বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরতে পেরেছি। আমাদের সংগঠিত হতে হবে, আমাদের অবিচল থাকতে হবে, আমাদের মূল লক্ষ্যে নিবদ্ধ থাকতে হবে। (বিক্ষোভ) সহিংস হওয়া যেমন ঠিক নয়, তেমনি এটিকে ভদ্রোচিতও রাখা যায় না।’

বিক্ষোভকারীরা জোরালো কণ্ঠে বলছিলেন, ‘ইসরায়েল তুরস্ক নয়, ইসরায়েল ইরান নয়।’ নেতানিয়াহুর নেওয়া বেশ কিছু সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের জন্য ‘লাল পতাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এর একটি হলো, বারকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। আরেকটি হলো, অ্যাটর্নি জেনারেল গ্যালি বাহারাভ মিয়ারাকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। মিয়ারা যুক্তি দেখিয়েছেন, বারকে তাঁর পদ থেকে উৎখাত করা হলে তা অবৈধ হতে পারে।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইনবিশেষজ্ঞ আমির ফুচস বলেন,‘সরকারের বারকে বরখাস্ত করার এখতিয়ার আছে। তবে এরপরও প্রশাসনিক আইন মেনে চলতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি স্বার্থের সংঘাত দেখা দেয়, তবে সুপ্রিম কোর্ট এটাকে আটকাতে পারে।’

এআর

Wordbridge School
Link copied!