Menu
ঢাকা : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণার ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার পাশাপাশি গাড়ির দাম বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ২ এপ্রিল থেকে নতুন ধার্য করা শুল্ক কার্যকর হবে।
অন্যদিকে, আমদানি করা গাড়ির যন্ত্রাংশের ওপর মে মাস বা তার পরে থেকে শুল্ক আরোপ হতে পারে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ মার্চ) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এসব তথ্য জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।
ট্রাম্পের দাবি, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগসহ গাড়ি শিল্পে ব্যাপক প্রবৃদ্ধি আনবে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। গাড়ির দাম বাড়বে এবং মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ভাটা পড়বে।
গত বছর প্রায় ৮০ লাখ গাড়ি আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যার মোট মূল্য ছিল প্রায় ২৪০ বিলিয়ন ডলার। মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিদেশি গাড়ি সরবরাহকারী দেশ। এরপর রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, কানাডা ও জার্মানি।
এ ছাড়া অনেক মার্কিন গাড়ি কোম্পানি মেক্সিকো ও কানাডায় তাদের গাড়ি উৎপাদন করে। তিন দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী এসব ব্যবসা চলমান। হোয়াইট হাউস অবশ্য জানিয়েছে, এই আদেশে শুধু তৈরি গাড়ি নয়, বরং গাড়ির যন্ত্রাংশের জন্যও শুল্ক প্রযোজ্য হবে। অন্য দেশ থেকে আমদানি করা এসব যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে সংযোজন করা হয়।
তবে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশের ওপর নতুন শুল্কে কিছুটা ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মার্কিন কাস্টমস ও বর্ডার প্যাট্রোল শুল্ক পরিমাণ নির্ধারণের আগ পর্যন্ত দুই দেশ থেকে যন্ত্রাংশ আমদানি শুল্ক মুক্ত থাকবে। প্রতিবেশী এই দেশগুলোর মধ্যে প্রতিদিন বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য পারাপার হয়।
এদিকে ট্রাম্পের এই নতুন পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী গাড়ি বাণিজ্য ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার জেনারেল মোটরসের শেয়ার প্রায় তিন শতাংশ কমেছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হওয়ার পর ফোর্ডসহ অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারেও বিক্রির চাপ ছড়িয়ে পড়ে।
ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে শুল্কের বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করা হবে কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘না, এটি স্থায়ী। আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি তৈরি করেন, তবে কোনো শুল্ক নেই।’
অন্যদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেছেন, তার সরকার এই শুল্কের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ‘সব ধরনের বিকল্প’ খতিয়ে দেখবে। জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি রপ্তানিকারক দেশ। টয়োটা, নিশান, হোন্ডাসহ অন্যান্য গাড়ি নির্মাতা কোম্পানির শেয়ার টোকিওতে প্রাথমিক ট্রেডে কমে গেছে।
ট্রাম্প এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রে আসা বিভিন্ন পণ্যের ওপর প্রয়োগের মাধ্যমে মার্কিন ব্যবসা রক্ষা ও উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা করছেন। তবে তার এই পদক্ষেপ দেশীয় ব্যবসা রক্ষা করতে পারলেও বৈশ্বিকভাবে গাড়ি শিল্পের জন্য হুমকি। বিশ্লেষকরা ধারণা করেছেন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে যন্ত্রাংশের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আমদানি হলে গাড়ির দাম কয়েক হাজার ডলার বৃদ্ধি পেতে পারে, যা চার হাজার থেকে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
এমটিআই
© 2025 সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সোনালীনিউজ.কম
Powered By: Sonali IT