ঢাকা: তীব্র গরমে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ঘাম হচ্ছে খুব। এমন আবহাওয়ায় সহজেই পানিশূন্যতা হয়, কখনো রক্তে লবণও কমে যেতে পারে বেশি ঘামার কারণে। এ ছাড়া গরমজনিত অসুস্থতাও হয় অনেকের।
চিকিৎসকেরা বারবার পরামর্শ দেন, বেশি করে পানি পান করুন, পানিশূন্যতা এড়িয়ে চলুন। বিশেষ করে যারা বাইরে রোদে কাজ করেন বা যেসব শিশু খেলাধুলা করে। কিন্তু কতটুকু পানি খাবেন?
প্রথমত, শরীরে পানির অভাব হচ্ছে কি না, তা বোঝার জন্য আমাদের মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে পিপাসা কেন্দ্র আছে। যখনই পানির অভাব হয়, এই কেন্দ্র জানান দেয় যে পানি পান করতে হবে। অবশ্য খুব ছোট শিশু ও বৃদ্ধ বা স্মৃতিভ্রম, স্ট্রোকের রোগী বা মানসিক রোগীরা নিজের চাহিদা ভালো করে বুঝতে পারেন না বা প্রকাশ করতে পারেন না।
তাই তাদের ক্ষেত্রে চাই সতর্কতা। আমাদের আবহাওয়ায় একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বা নারীর দৈনিক সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করলে মোটামুটি চাহিদা মেটে। কিন্তু জ্বর, ডায়রিয়া, বমি, বেশি ঘাম এই চাহিদা বাড়িয়ে দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, পানি বেশি পানও ভালো নয়। ওভারহাইড্রেশন হলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে, কারও আবার শরীর ফুলে যেতেও পারে। কিডনি, যকৃৎ ও হৃদ্রোগীদের চিকিৎসক পানি মেপে খেতে বলেন, সে জায়গায় অতিরিক্ত পানি পান করা বিপজ্জনক হতে পারে।
অ্যাথলেট বা খেলোয়াড়েরা প্রচুর ঘামেন, যাতে লবণপানি দুটিই হারায় শরীর, সে ক্ষেত্রে তারা যদি শুধু বারবার পানি পান করেন, তাহলে রক্তে লবণের ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। তাদের উচিত ইলেকট্রোলাইটসহ পানি, ডাবের পানি, স্যালাইন পানি পান করা।
অথবা শুধু পানির সঙ্গে মাঝেমধ্যে লবণাক্ত স্ন্যাকস খাওয়া। আর কিডনি, যকৃৎ বা হৃদ্রোগীরা কতটুকু পানি পান করবেন, তা তাদের প্রস্রাবের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। ২৪ ঘণ্টায় যতটুকু প্রস্রাব হয়েছে, তার চেয়ে ৫০০ মিলিলিটারের মতো বেশি খেলেই হলো।
তৃতীয়ত, পানিশূন্যতা হলে আমাদের মাথা ফাঁকা লাগে, ত্বক ঢিলে হয়ে যায়, চোখ গর্তে ঢুকে যায়। সবচেয়ে বড় কথা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় বা প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়। বিশেষ করে শিশুদের এসব লক্ষণ দেখলে বুঝবেন যে পানিশূন্যতা হচ্ছে, পানি পূরণ করতে হবে।
আরেকটা কথা, পানির বদলে চিনিযুক্ত ড্রিংকস, কোলা বা জুস খেলে তাতে পানিশূন্যতা দূর হয় না, বরং এগুলো রক্তের ঘনত্ব আরও বাড়ায়।
এআর