ঢাকা: হিট স্ট্রোকের মুহূর্তে মূলত দুইটা অনুভূতি হয়। একটা হলো, গা গুলানো বমি বমি ভাব হবে। দ্বিতীয় অনুভূতি হচ্ছে, খারাপ লাগা। এই খারাপ লাগার ব্যাখা নাই। একটু অস্বস্তি, কিছুটা অশান্তি।
কনফিউশন। মনে হবে, আচ্ছা আমার এমন লাগছে কেন? আমি কি একটু বসব? আরে থাক, এমনিই এমন লাগছে ঠিক হয়ে যাবে। আমার কি বেশিই খারাপ লাগছে? কাউকে বলব? না থাক, আর সামান্য হাঁটি বা কাজ করি, পরে রেস্ট নেব নে। এমন অনেক তো হয়। ঠিক হবে, ঠিক হবে।
কিন্তু এটা ঠিক হবে না।
আপনি আরো কনফিউজড হবেন। কথা জড়িয়ে যাবে। শরীরের নিয়ন্ত্রণ ও কথা বলার ক্ষমতা মুহূর্তের মধ্যে হারাবেন। তারপর পা টাও নাড়ানোর সুযোগ পাবেন না; পড়ে যাবেন।
হাতে গোনা কয়েক মিনিট। এই সময়টাই আপনাকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দেবে। অর্থাৎ আপনারা যারা এই গরমে বাইরে বের হবেন, কাজ করবেন তারা এই লক্ষণ ও অনুভূতির মধ্য দিয়ে গেলে প্রথম সেকেন্ডেই সতর্ক হতে হবে।
গায়ে হাত দিয়ে তাপ দেখুন। বেশি মনে হলেই হল্ট। কোনো কনফিউশনে পড়া যাবে না। হাঁটলে হাঁটা থামিয়ে ছায়ায় বসে পড়ুন। গাছ না থাকলে পাশের কোনো দোকান বা বাসার গ্যারেজে ঢুকুন। গায়ের তাপ যদি বেশি দেখেন, সাথে সাথে পানি খান বা কারো কাছে পানি চান। এই সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করলে একটু পরেই আপনি চিন্তার নিয়ন্ত্রণ হারাবেন। সিভিয়ার কনফিউশন হবে। তখন আপনার ভাগ্য অন্যের হাতে থাকবে।
হিট ওয়েবের সময় যাচ্ছে, এটা লিটারেলি দুর্যোগের সময়। দুর্যোগে মানুষকে একে অন্যের আপন হতে হয়। কেউ যদি হিট স্ট্রোকের লক্ষণযুক্ত কোনো মানুষকে বসে পড়তে বা ঢলে পড়তে দেখেন, প্লিজ তাকে সাহায্য করবেন। শুরুতেই ছায়ায় নিয়ে যান। বাতাস করুন।
গায়ে বাতাস লাগতে দিন। পুরুষ মানুষ হলে নির্দ্বিধায় উপরের জামা কাপড় খুলে নিন। ভিক্টিম মহিলা হলে সম্ভব যদি হয় আশেপাশের মহিলা কারোর হেল্প নেয়া যেতে পারে। হাতে পায়ে ও ঘাড়ে ঠান্ডা পানি বা বরফ দিয়ে ম্যাসেজ করুন৷ মনে রাখবেন, হিট স্ট্রোকের ক্ষতি কমানোর একটাই উপায়; যত দ্রুত সম্ভব শরীর ঠান্ডা করা। দেরি হলে ক্ষতির আশংকা বাড়বে। ব্রেইন ড্যামেজ হতে পারে, কিডনি ফেইল করতে পারে।
সাধারণ কিছু পরামর্শ
১। অতি প্রয়োজন ছাড়া কেবল আড্ডাবাজির জন্য বাইরে বের না হওয়াই উত্তম।
২। বাইরে বের হলে সাথে যতটা সম্ভব পানি রাখা যায়, রাখা উচিত। একটু পরপর পানি খান।
৩। সাদা পাতলা ও সুতির কাপড় পরে বের হওয়া ভালো।
৪। ক্যাপ, ছাতা সাথে রাখুন।
৫। গরমের মধ্যে শরীরে যে কোনো অস্বাভাবিকতা টের পেলেই সবচেয়ে খারাপ জিনিসটাই আশংকা করুন এবং সেভাবে ব্যবস্থা নিন।
এআর