ঢাকা : দীঘল কালো সুন্দর চুল আমাদের সবারই পছন্দ। কিন্তু চাইলেই কি তা সম্ভব? চুলের আছে নানা সমস্যা। চুল পড়া, আগা ফাটা থেকে শুরু করে চুল পাকা আরও কত কিছু। তাই যত্ন নিতে হয় নিয়মিত। চুল নারী-পুরুষ উভয়ের সৌন্দর্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে বর্তমানে চুলকে মজবুত রাখাটা বেশ কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে।
চারপাশে এতবেশি বায়ুদূষণ, যে চুলের যত্ন নেয়াটা খুব জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকেই চুলের যত্ন পড়া নিতে রাসায়নিক প্রসাধনীর পেছনে হাজার হাজার টাকা খরচ করেন। এতে ভালোর থেকে খারাপটাই বেশি হয়। তবে ঘরোয়া পদ্ধতিতেও চুল পড়ার হার কমিয়ে তা ঘন ও লম্বা করা সম্ভব। চুলের প্রাকৃতিক যত্ন আমরা ঘরেও নিতে পারি।
আসুন জেনে নেই চুলে যত্নে ঘরোয়া পদ্ধতি নিয়ে...
তেল দেওয়া : বিশেষজ্ঞদের মতে, বিভিন্ন ভেষজ তেল চুলের পুষ্টি যোগায় ও বৃদ্ধি বাড়ায়। তাই যদি নিয়মিত চুলে তেল মালিশ করা হয় তাহলে চুল দ্রুত লম্বা হয়। আবার বিভিন্নরকম তেলের মিশ্রণ তৈরি করে যেমন, ১ চা-চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল, ১ চা-চামচ কাঠবাদাম তেল, ১ চা-চামচ জলপাই তেলের মিশ্রণ তৈরি করে হালকা গরম করে তা চুলে ব্যবহার করা যায় তাহলে চুল দ্রুত লম্বা হয়।
রুক্ষতা কমাতে অ্যালো ভেরা : অ্যালো ভেরা জেলে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে যা চুলের পক্ষে উপকারী। বিশেষ করে চুল থেকে রুক্ষতা কমাতে জুড়ি নেই অ্যালো ভেরার। শ্যাম্পু করার পর হাতে খানিকটা টাটকা অ্যালো ভেরা জেল নিয়ে চুলে মেখে নিন। জেলটা চুলে শুষে যাওয়ার পর চুল ব্রাশ করে বা আঁচড়ে নিন। রুক্ষতা উধাও হয়ে চুল হয়ে উঠবে কোমল আর মসৃণ!
চাল ধোওয়া জলের জাদু : পরেরবার চাল ধোওয়া জল বা ভাতের ফ্যানটা ফেলে দেবেন না! লম্বা চুলে জৌলুস আনতে এ জিনিস খুবই কাজের! চাল ধোওয়া জল আর ফ্যানে প্রোটিন, ফাইটিক অ্যাসিড আর লিপিড থাকে যা চুলের স্বাস্থ্যরক্ষা আর বাড়বৃদ্ধিতে দারুণ সাহায্য করে। অকালে চুল সাদা হয়ে যাওয়া বা চুল ওঠার মতো সমস্যা থাকলে ব্যবহার করে দেখুন চাল ধোওয়া জল বা ভাতের ফ্যান! স্বাভাবিক শ্যাম্পু করার পর শেষবার চুল ধুয়ে নিন চাল ধোওয়া জলে আর তফাতটা নিজেই দেখুন!
আমলকীর ব্যাবহার : দুই টেবিল-চামচ আমলকীর সঙ্গে দুই টেবিল-চামচ তিলের তেল ও আধা কাপ টক দই মিশিয়ে নিন। এই প্যাক ব্যবহারে শুষ্ক চুলে আসবে ঝলমলে সতেজতা।
প্রতিদিন অন্তত একটি আমলকী খাওয়ার চেষ্টা করুন। চুল পড়া কমবে। পেঁয়াজের রস চুল গজাতে সাহায্য করে। ১৫ দিনে ১ বার মাথার তালুতে তুলোয় করে পেঁয়াজের রস লাগাবেন।
প্যাক লাগানো : বিশেষজ্ঞদের মতে, চুলে পুষ্টি জোগাতে সপ্তাহে একদিন প্রোটিন প্যাক লাগানো খুবই জরুরী। বর্তমানে বাজারে চুলের অনেক প্রোটিন প্যাক কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু অনেক সময় এসব প্রোটিন প্যাকে ক্ষতিকর কেমিক্যাল থাকতে পারে, যা আমদের উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি করে থাকে। তবে, ঘরে বসেই এই সকল প্যাক বানিয়ে চুলে ব্যাবহার করা যেতে পারে। যেমন- টক দই, ডিম মিশিয়ে প্যাক বানানো যেতে পারে। তবে প্যাক ব্যবহারের আগে চুলে ২ চা-চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল ও ১ চা-চামচ পেঁয়াজের রসের সঙ্গে ৪-৫ ফোঁটা ভিনেগার বা লেবুর রস মিলিয়ে নিলে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি প্যাকের কার্যকারিতাও বেড়ে যাবে।
এ তো গেল চুলের বাইরের যত্নের কথা। ভালো চুল পেতে হলে খাওয়া দাওয়াতেও নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রোটিন যেমন মাছ, ডিম এবং ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার চুলের জন্য ভালো। শাক সবজি এবং ফল ও খেতে হবে প্রচুর। পেটের সমস্যা থেকে অনেক সময় চুল পড়ে, তাই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হেয়ার ড্রায়ার, আয়রন মেশিন, কারলার, স্প্রে, হেয়ার চক, হেয়ার কালার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ডক্টর এর সাথে আলোচনা করে ভিটামিন বা আয়রন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে।
ইউআর/এমটিআই