ঢাকা: তুলসী পাতার আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। এককালে এই ওষুধকে এতটাই গুরুত্ব দেওয়া হত যে প্রতিটি বাড়িতে তুলসী গাছ রাখা, তার নিয়মিত সেবাযত্ন করা আবশ্যক ছিল। প্রাচীনকাল থেকেই প্রতিটি বাড়িতে তুলসী গাছ পোঁতা ও তা রক্ষণাবেক্ষণের রেওয়াজ চলে আসছে। নানা ছোটখাটো ঘরোয়া সমস্যার সমাধানে আপনাকে সাহায্য করতে পারে তুলসী।
১.প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে সবাই যখন কম-বেশি মানসিক চাপ বা অবসাদে ভুগছেন তখন অব্যর্থ ওষুধ হিসেবে কাজ করে তুলসী। আপনি প্রতিদিন যদি ১০ থেকে ১২টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান তাহলে রক্তচাপের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণে থাকবে মানসিক অবসাদও।
২.ত্বক, চুল ও দাঁতের ভালোর জন্য তুলসীর ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখে বা মাথায় এর রস মাখলে ত্বক ও চুলে উজ্জ্বলতা আসার পাশাপাশি দূরে থাকবে ব্রণ। চুল পড়া কমার সঙ্গে সঙ্গে ভালো থাকে মাড়ি ও দাঁতের স্বাস্থ্য।
৩.তুলসীর পাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করার পর কয়েক ফোঁটা সরিষার তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। তারপর তা দিয়ে দাঁত মাজলে চুল ও ত্বক হবে উজ্জ্বল। আচমকা দাঁতের ব্যথা হলেও অর্থ্য টোটকার মতো কাজ করে তুলসী। এর জন্য আধ চা চামচ গোলমরিচের গুঁড়োর সঙ্গে ৪ থেকে ৫টা তুলসী পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিতে হবে। তারপর সেটা ব্যথার জায়গায় লাগিয়ে রাখতে হবে কিছুক্ষণ। দিনে তিনবার এটি লাগালে কদিনের মধ্যেই কমবে ব্যথা। পরে অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে পুরোপুরি রোগ মুক্ত হওয়ার জন্য।
৪.ঠান্ডা লেগে জ্বর হলে খালি পেটে হাফ লিটার পানির সঙ্গে এক থেকে দু চা চামচ এলাচের গুঁড়া ও ৭টার মতো তাজা তুলসী পাতা ধুয়ে পানি দিয়ে ফোটান। পানি অর্ধেক হওয়ার পর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে দু-তিন ঘণ্টা অন্তর চুমুক দিয়ে খান। দরকারে মেশাতে পারেন মধুও। তাহলে জ্বর কমার পাশাপাশি কমবে গলাব্যথা।
৫.মাথাব্যথা সারাতেও কাজে আসে তুলসী। বেশ কয়েকটি তুলসী পাতা দিয়ে ২ কাপ পানি ভালো করে ফোটান। তারপর পানি ঠান্ডা করে রেখে দিন। যখন মাথাব্যথা হবে তখন একটি কাপড় সেটিতে ভিজিয়ে ভালো করে নিংড়ে নিয়ে মাথায় জলপট্টি দিন। তাহলে কিছুক্ষণের মধ্যে কমবে মাথাব্যথা।
৬.ভিটামিন সি ও জিংক রয়েছে তুলসী পাতায়। তাই তুলসী দিয়ে তৈরি করা চা শক্তিশালী করবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে। এর ফলে লিভার, ফুসফুস ও ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে সঙ্গে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণও কমাবে তুলসী।
ইউআর