মিয়ানমারে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফে অন্তত ২৫ ঘরে ফাটল

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৩:৪২ পিএম
মিয়ানমারে বোমা বিস্ফোরণের শব্দে টেকনাফে অন্তত ২৫ ঘরে ফাটল

কক্সবাজার: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমার জান্তার মধ্যে এখনো চলমান রয়েছে যুদ্ধ। শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে যেন কেঁপে উঠে এপারের সীমান্তবর্তী টেকনাফ-উখিয়া এলাকা। ভারি মর্টার শেলের আওয়াজ সীমান্ত এলাকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। ভারি বোমার আওয়াজ এতোটাই শক্তিশালী নাফ নদী পেরিয়ে এপারেও যেন মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের আচারবুনিয়া গ্রাম। এই গ্রামটি নাফ নদীর তীরে অবস্থিত। নদীটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে বিভক্ত করেছে। সীমান্তবর্তী এই গ্রামের ঠিক ওপারে অবস্থিত মংডু শহরে কয়েক মাস ধরে মায়ানমার জান্তা সেনা ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে ভয়াবহ লড়াই চলছে।

সীমান্তের ওপারে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট ভূ কম্পনের কারণে কক্সবাজারের টেকনাফের এই গ্রামে অন্তত ২৫টি মাটির ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) আচারবুনিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো মাটি ও ইট দিয়ে তৈরি এবং সেখানে বসবাস করছে নিম্ন আয়ের গ্রামবাসীরা। গভীর ফাটল তাদের জীবনের ঝুঁকি তৈরি করছে।

গ্রামবাসীরা যুদ্ধের শিকার হওয়ার জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যদিও তাদের সাথে যুদ্ধের কোন সম্পর্ক নেই, তারা দাবি করেছে। তারা বলেছে তাদের ঘর মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত টাকাও নেই।

গ্রামের একজন জাহেদ উল্লাহ বলেন, ‘মায়ানমারের যুদ্ধবিমান যখন সীমান্তের ওপারে বোমা বর্ষণ করে তখন আমাদের বাড়িঘর এমনভাবে কেঁপে ওঠে যেন ভূমিকম্প হয়। বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই প্রচণ্ড যে তা আমাদের মাটির ঘরগুলোকে কম্পিত করে। বিস্ফোরণের বিকট প্রতিক্রিয়ায় আমার বাড়ি এবং আমার ভাইয়ের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি একদিনে তৈরি হয়নি, বড় বোমার প্রভাবে গত তিন মাস ধরে আমাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

গ্রামের গৃহবধূ হামিদা খাতুন জানান, মিয়ানমারের দিক থেকে বোমা বিস্ফোরণে বাড়ির দেয়াল ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে। যখন প্রচণ্ড শব্দে বোমাগুলো বিস্ফোরিত হয়, তখন আমাদের শিশুরা ভয়ে চিৎকার করে উঠে। বিস্ফোরণের শব্দে আমরা প্রায় তিন মাস রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা ভয়ে বসবাস করছি। যে কোনো বোমা যদি ভুলবশত আমাদের এলাকায় পড়ে যায়, আমরা মুহূর্তের মধ্যে মারা যাব।’

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, বিস্ফোরণের ফলে যে আফটার শক হচ্ছে তার ফলে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা সরকারি সহায়তা পাবেন।

এসএস

Link copied!