খুলনা: খুলনা মুক্তিযোদ্ধা কলেজ নিয়ে আওয়ামী লীগ আমলে চরম দলীয়করণ, দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে এলাকাবাসীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মান বন্ধনে এ অভিযোগ করা হয়।
খুলনার জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন লবণচরা থানাধীন মুক্তিযোদ্ধা কলেজের সামনে মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাতেমা খাতুন শিল্পীকে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তাকে কলেজ থেকে বহিষ্কার, গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষে জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, সাফায়েত হোসেন লিখন, আব্দুর রব, আঃ ছাত্তার আকন, ডাঃ ফজলুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২০০১ সালে এস এম মোমিনুল ইসলামের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রথম বছরেই শিক্ষক ও এলাকাবাসীর প্রচেষ্টায় কলেজে ১৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয় এবং বটিয়াঘাটা উপজেলার মধ্যে শীর্ষস্থান দখল করে। তাছাড়া কলেজটি প্রতিষ্ঠার ফলে এলাকাবাসীর কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়। সুনামের সাথে কয়েক বছর চলার পর ২০০৯ পরবর্তী সরকারের আমলে ভিন্নমতের শিক্ষকদের কলেজে ঢুকতে না দিয়ে চরম দলীয়করণ করা হয়। সেই থেকে এখন পর্যন্ত কলেজটিতে চরম দুর্নীতি, অনিয়ম, শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য, সরকারের কাছ থেকে বিশেষ করে জেলা পরিষদ থেকে লাখ লাখ টাকা নেয়া হলেও কলেজের কোন উন্নয়ন কাজ না করে লুটপাট চলে।
বর্তমানে কলেজটি অনেকটা গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে। নেই শিক্ষার্থীও। কলেজের অনেক শিক্ষকও বেতন না পেয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের নামে কলেজটি স্থাপিত হলেও এমপিওভুক্ত না করে চরম ধৃষ্ঠতা দেখানো হয়েছে। শুধুমাত্র গত জুলাইতে কলেজের সাবেক সভাপতি হারুনর রশীদকে বাদ দিয়ে নতুন সভাপতি করে এমপিওভুক্তির জন্য চেষ্টা করেন সাবেক এমপি ননী গোপাল মন্ডল।
২০১০ সালে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খোকন চন্দ্র মন্ডলের অন্য এক শিক্ষকের সাথে অনৈতিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে নতুন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষক ফাতেমা খাতুন শিল্পী নিয়ম বহির্ভুতভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে আসীন হন। সেই থেকে গত ৫ আগষ্টের পট পরিবর্তনের পর পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করলেও কলেজের কোন উন্নয়ন হয়নি। বরং জেলা পরিষদের মাধ্যমে কলেজের নামে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এমনকি কলেজটি এমপিভুক্ত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্যেও মেতেছিলেন পলাতক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফাতেমা খাতুন শিল্পী। বক্তারা মুুক্তিযুদ্ধের নাম ব্যবহার করে কলেজের নামে এ পর্যন্ত সংগঠিত সকল প্রকার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিচার দাবি করেন।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :