পঞ্চগড় : অভ্যুত্থানের তিন মাস পর তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কিছু হতাশা ও ক্ষোভ দেখতে পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বুধবার (৬ নভেম্বর) পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘আমরা পঞ্চগড়ের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়েছি, তাদের (শিক্ষার্থীদের) সঙ্গে কথা বলেছি এবং তরুণ প্রজন্মের যে চিন্তা এবং ভাষা, সেই ভাষার সঙ্গে সংযোগ ঘটানোর চেষ্টা করেছি। অভ্যুত্থানের তিন মাস পরে এসে আমরা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কিছু হতাশা দেখতে পাচ্ছি, কিছু ক্ষোভ দেখতে পাচ্ছি।’
এ সময় তাঁর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের’ সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলমসহ পঞ্চগড় জেলার সমন্বয়কেরা উপস্থিত ছিলেন। সারা দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো এবং সবার কথা শোনার অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে তেঁতুলিয়া থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে তাঁরা সংবাদ সম্মেলনে জানান।
সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বক্তব্যর কড়া জবাব দিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) একটি কথা বলেছেন যে বাবার আগে ছেলে হাঁটলে দেশ শেষ। অর্থাৎ উনি বুঝিয়েছেন যে ওনাদের আগে যদি তরুণ প্রজন্ম কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি দেশকে ধ্বংস করে দেবে।
আমি মির্জা আব্বাস সাহেবকে বলতে চাই, আমার বয়স ২৬ বছর। আমার বাবার বয়স ৫২।
আর মির্জা আব্বাস রাজনীতি করেন অন্তত ৫৫ বছর। অর্থাৎ, আমার বাবার বয়সের চেয়ে বেশি ওনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাতে ওনাদের যে ত্যাগ সেটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে মির্জা আব্বাস সাহেবের প্রতি সম্মান রেখে বলছি যে ওনাদের কটাক্ষমূলক বক্তব্য আমাদের মধ্যে প্রজন্মভিত্তিক কনফ্লিক্ট তৈরি করছে।
এছাড়া বিএনপিকে উদ্দেশ করে হাসনাত আবদুল্লাহ গত ১৬ বছরের নির্যাতন ও সাংবিধানিক অধিকার, মৌলিক-মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। হাসনাত বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের অন্যায় আচরণ যখন সর্বোচ্চ মাত্রায় চলে যায়, তখন কিন্তু বাবার আগে সন্তানেরাই রাস্তায় নেমে আসে। তখন সন্তানেরাই কিন্তু বুক চেতিয়ে দেয়। আপনারা যাঁরা বাবা রয়েছেন, সন্তানদের পেছনেই কিন্তু এই গণ–অভ্যুত্থান করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের এ আহ্বায়ক আরও বলেছেন, ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা দেখছি খুনি হাসিনা যে এতিম সন্তানদের দেশে রেখে গেছেন, তাদের মধ্যে এক ধরনের খুশির আমেজ বিরাজ করছে। আমরা তাদের বলতে চাই, আমেরিকায় কে নির্বাচিত হলো সেটি দিয়ে বাংলাদেশের পলিসি নির্ধারণ হবে না। বাংলাদেশের পলিসি নির্ধারিত হবে আমাদের শহীদ ভাইদের রক্তের যে দায়টি রয়েছে সেই দায় থেকে।
এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :