ময়মনসিংহ: আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি ময়মনসিংহের অধিকাংশ রেল স্টেশনগুলোতে। কোন রকমে কার্যক্রম চলছে শতবর্ষে পুরাতন এসব স্টেশনে। স্টেশনের অবকাঠামো উন্নয়ন ও স্টপেজ না থাকায় বিপাকে পড়ছেন কৃষক, কর্মজীবি ও শিক্ষার্থীরা। রাতে এসব স্টেশন যেন হয়ে উঠে অপরাধের হটস্পটে। এ অঞ্চলের রেল খাতের উন্নয়নে নাগরিক সংগঠন তাগিদ দিলেও বরাবরের মতই আশার বাণী শুনিয়েছে রেল বিভাগ।
ময়মনসিংহ-ঢাকা রেল রুটে ফাতেমানগর, আওলিয়া নগর, ধলা সহ রয়েছে বেশ কয়েকটি শতবর্ষ পুরোনো রেলওয়ে স্টেশন। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ ভবনেই চলছে এসব স্টেশনের কার্যক্রম।
শুধু তাই নয়, খোলা আকাশের নিচে নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রাংশ। রাতে চলাচলকারীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে উঠে স্টেশনগুলো। আর অধিকাংশ ট্রেনের স্টপেজ না থাকায় বিপাকে পড়ছেন তিন উপজেলার কৃষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবির মানুষ।
কালীরবাজারের স্থানীয় লোকমান হোসেন জানান, প্লাটফর্ম উঁচু করা ছাড়া আর কোন উন্নয়ন হয়নি ফাতেমানগর রেল স্টেশনে। অল্প বৃষ্টি হলেই চাল বেয়ে পানি পরে। এতে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
ঢাকা এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জিসান হাসান বলেন, এই স্টেশনে কোন উন্নয়ন নেই। ট্রেনও থামেনা সবগুলো। এতে আমাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে ট্রেনের সিডিউল মিলে না।
কৃষক বাতেন আলী বলেন, ত্রিশাল, নান্দাইল আর ঈশ্বরগঞ্জের মাঝে এই স্টেশন হওয়ায় গুরুত্ব বহন করে কৃষি ক্ষেত্রে। আমরা যারা কৃষক আছি, তারা উৎপাদিত ফসল নিজেরাই পরিবহন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতে পারতাম।
স্টেশনের পাশের দোকান করেন কাশেম সরকার। তিনি জানান, রেল লাইনের খোলা আকাশের নিচের রেল লাইনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। সেই সাথে চুরিও হচ্ছে। কয়েকদিন আগে চোরচক্র মিনি ট্রাক নিয়ে এসে এই সব স্লিপার চুরি করার চেষ্টা করলে, জনগন টের পেয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। পরে পালিয়ে যায় তারা।
জেলা নাগরিক আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক শিব্বির আহমেদ লিটন বলেন, স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের সাথে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। এঅঞ্চল থেকে রেলের যে আয় হবে তা দিয়েই রেলের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব।
এদিকে রেল বিভাগ সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আকরাম আলী জানায়, নতুন ভবন নির্মাণ ও রক্ষানাবেক্ষনের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আর্থিক অনুমোদন পেলেই শুরু হবে কাজ।
শুধুই কাগজে-কলমে স্টেশনগুলোর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এসব স্টেশনগুলো ডিঙ্গিয়ে প্রতিদিন ঢাকা, জামালপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, মহনগঞ্জ রোডে ৮-১০টি ট্রেন চলাচল করে। রেলকে লাভজনক ও যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, এমনটাই প্রত্যাশা ময়মনসিংহবাসীর।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :