শেরপুর: শেরপুরে ছাত্র-জনতার তোপের মুখে হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় চলে গেছেন শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিঞা। শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ করলে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কার্যালয় ছেড়ে চলে যান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ছানু এবং সাবেক হুইপ আতিউর রহমান আতিকের আস্থাভাজন ডা. সেলিম মিঞা নেত্রকোনা জেলায় সিভিল সার্জন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত জুলাই মাসে শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক পদে যোগ দেন তিনি। এরপর তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেন।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা ডা. সেলিম মিঞা নিজ জেলায় যোগ দেওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম যেন তার নিত্যদিনের কাজ হয়ে দাঁড়ায়। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা, রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া, আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে চাকরি থেকে বের করে দিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিজের পছন্দমত লোকজন নিয়োগ দেওয়া, ওষুধ ও মালামাল কেনায় দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ কয়েকশত ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবি করেন। সেইসঙ্গে ছাত্র-জনতা তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে অবস্থা বেগতিক দেখে কৌশলে সটকে পড়েন ডা. সেলিম মিঞা। পরে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে নারায়ণপুরসহ শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে সদর হাসপাতাল গেটে এসে শেষ হয়।
এ ব্যাপারে ডা. সেলিম মিঞার সঙ্গে মুঠোফোনে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কিছু লোক আমার কার্যালয়ে এসেছিল এবং আমাকে অফিস থেকে চলে যেতে বলেন। বিষয়টি আমার কাছে রাজনৈতিক বলে মনে হয়েছে। পরে আমি বাড়ি চলে আসি। আমি পালিয়ে আসিনি।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের ময়মনসিংহের বিভাগীয় পরিচালক ডা. শাহ আলী আকবর আশরাফী মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি এবং অতিরিক্ত সচিবকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য বিভাগ স্বচ্ছ এবং সেবামূলক রাখতে ফ্যাসিবাদী কাউকে দায়িত্বে রাখা হবে না।’
রোববার (১৭ নভেম্বর) হাসপাতাল পরিদর্শনে যাবেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এসএস
আপনার মতামত লিখুন :