কুয়াকাটায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সড়কে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগ

  • কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৪, ০৭:১৭ পিএম
কুয়াকাটায় ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সড়কে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগ

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একটি রাস্তা সংস্কারে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। কুয়াকাটা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের অর্ন্তগত কুয়াকাটা হোটেল রোজভ্যালি (বর্তমান নিউ সিকদার প্যালেস) থেকে ফকিরবাড়ি পর্যন্ত ১৪৫০ মিটার রাস্তার কার্পেটিং সংস্কারের কাজে অনিয়মের অভিযোগ করেছে এলাকাবাসীরা।

জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়া এবং পুনরুদ্ধার প্রকল্প (এলজিসিআরআরপি) এর আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বরাদ্ধকৃত রাস্তা সংস্কারে ঠিক সময়ে কাজ শুরু না করা, তরিগরি করে কাজ উঠনো, ধুলাবালু ঠিকমত পরিস্কার না করে সামান্য পরিমান বিটুমিন দেয়া, পুরানো ইট ব্যবহার, কমপক্ষে ১২-১৫ মিলিমিটার কার্পেটিংয়ের পরিবর্তে কোথাও অর্থেক, আবার কোথাও তার থেকেও কম কার্পেটিং দিয়ে নামেমাত্র রাস্তা সংস্কার কাজ শেষ করার অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গাজী কনষ্ট্রাকশনের বিরুদ্ধে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা সংস্কারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়, তবে নিয়মের বালাই না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মনগড়া কাজ করা হচ্ছে, রাস্তার পাশের পুরানো ইট দিয়ে মেরামত করে তার উপরে কোনোমতে পরিস্কার না করেই বিটুমিন দেয়া হচ্ছে। তবে নিয়মের মধ্যে থেকেই কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আর কাজের দায়িত্বে থাকা পৌর কর্তৃপক্ষ জানালেন, কাজের অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুয়াকাটা পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুন মাসে শুরু হওয়া কুয়াকাটা পৌরসভার আওতাধীন ২২৪০ মিটার রাস্তাসহ মোট ৪টি স্কিনের কাজের দায়িত্ব পায় মেসার্স গাজী কনস্ট্রাকশন। যার ব্যায় ধরা হয় ৬৯ লক্ষ ৪ হাজার ৫ শত পচাঁশি টাকা। যা শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে।

নবীনপুর এলাকার বাসিন্দা মো. হাসান আল-আউয়াল বলেন, এই রাস্তাটি সংস্কারে ৬মাস সময় নেয়া হয়েছে।  অথচ এতদিন কারো কোন খোঁজ নেই। হঠাৎ গত শনিবার কাজ শুরু করে কোনোমতে নামেমাত্র সংস্কার করে শেষ করছে। বালুর মধ্যে বিটুমিন দিচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে এমনভাবে কাজ করছে কোনোমতে একবার বৃষ্টি হলে আগের থেকেও খারাপ হয়ে যাবে।

ওই এলাকার বাসিন্দা মো. আল-আমিন জানান, বিগত দিনে আমাদের যেভাবে কোনো কথার মূল্যে ছিল না, সেভাবে তাদের কাছে আমাদেরও এখন মূল্যে নেই। তারা মনের মতো কাজ করে যাচ্ছে। এই কাজটি শুরুর দিকে আমরা যেভাবে আশা করছি তার উল্টো হচ্ছে, যেভাবে আধাইঞ্চি দেয়ার কথা পিচ দিচ্ছে আর অর্ধেকের কম। এই রাস্তা মনে হয় না বেশীদিন টিকবে।

অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গাজী কনস্ট্রাকশনের পরিচালক মো. ফেরদাউস গাজী প্রথমে কথা বলতে না চাইলেও পরে কাজের অনিয়ম অস্বীকার করে সঠিক কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেন। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ১০ মিলির কম পিচ দিচ্ছে দেখালেও কোথাও কম আবার কোথাও বেশী আছে বলে দাবি তার।

তবে কোথাও কম কোথাও বেশী দেয়ার সুযোগ নেই বলে জানায় কুয়াকাটা পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সুজন। তিনি আরও বলেন, কুয়াকাটা পৌরসভার কার্যসহকারীর সার্বক্ষনিক উপস্থিতিতে কাজ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো অনিয়মের অভিযোগ পাইনি। তবে আমরা বিষটিকে এখন গুরুত্ব দিয়ে দেখছি কোনো প্রকার নিয়মের বাহিরে গেলে আমরা কাজের বিল বন্ধ করে দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কৌশিক আহম্মেদ সড়ক সংস্কারে অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে বলেন, কাজ শেষ হলে আমাদের প্রকৌশলীরা গিয়ে কাজের পরিপূর্নতা না পেলে কাজ বন্ধ করে দিবে। শতভাগ কাজ না হলে তাকে কোনো বিল দেয়া হবে না।

এসএস

Link copied!