নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কিশোরীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। স্থানীয় দুই বিএনপি নেতা সালিস বৈঠকে ১৩ লাখ টাকায় ঘটনাটি রফা করেছেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, ওই দুই বিএনপি নেতা রফার থেকে ৩ লাখ টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছে।
জানা গেছে, উপজেলার একটি গ্রামের মাধ্যমিকের এক ছাত্রীকে আব্দুর রব নামের এক যুবক ধর্ষণ করেন। এতে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই গ্রামে গত সোমবার সন্ধ্যায় সালিস বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদিরসহ তাঁদের লোকজন ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লাগেন। সালিসে আব্দুর রবকে ১৩ লাখ টাকা দিতে বলে মীমাংসা করা হয়। বৈঠকে আব্দুর রব ৩ লাখ টাকা বিএনপি নেতা শাহজাহানের কাছে দেন। ওই টাকা বুধবার পর্যন্ত তার কাছেই ছিল। বাকি ১০ লাখ টাকা আগামী ২০ জানুয়ারিতে দেওয়ার কথা রয়েছে।
কিশোরীর এক স্বজন বলেন, মেয়েটি ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় ধর্ষণের বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিবারকে জানালে তারা সমাধান করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। সর্বশেষ তারা সালিস বৈঠক ডেকে ঘটনাটি ১৩ লাখ টাকায় মীমাংসা করেন। প্রথম দফায় কিশোরীর পরিবারকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয় বৈঠকে। কিন্তু বিচার বা সেই টাকা কোনোটাই পরিবারটি পায়নি।
কিশোরীর ভাই জানান, আব্দুর রব ও তার পরিবার ভালো না। তার কাছে আমার বোনকে বিয়ে দিবোনা। এই বিষয়টা নিয়ে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করা হয়েছে ১৩ লাখ টাকা আমাদেরকে দিয়ে দিবে এখন তারা ৩ লাখ টাকা আমাদের কাছে দিয়েছেন। বাকি টাকা কিছুদিন পর দিবেন। আমার বোনের বাচ্চা হওয়ার পর ওই বাচ্চা কে আব্দুর রব নিয়ে যাবেন।
অভিযোগের বিষয়ে রবের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি তা ধরেননি। এ বিষয়ে তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত না।’ তাহলে ধর্ষণের ঘটনা মীমাংসার নামে ৩ লাখ টাকা কেন দিয়েছেন, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এর কোনো উত্তর দেননি।
আরেক অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘সালিস বৈঠক হয়েছে। কিশোরী ও অভিযুক্তদের কথা শুনে বৈঠকে এলাকাবাসী ১৩ লাখ টাকা আদায়ের কথা বলেছে। তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক না।’
অভিযুক্ত বিএনপির নেতা সাবেক মেম্বার আব্দুল কাদির জানান, আমরা গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে ১৩ লাখ টাকা রাফা দফা করেছি। আপনারা সাংবাদিক আপনারাই বলেদেন কি করলে ভালো হয়।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এই বিষয়ে কিশোরীর পরিবার থেকে থানায় কোন অভিযোগ দেয়নি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআই
আপনার মতামত লিখুন :